আন্দোলনে যারা ব্যর্থ, নির্বাচনেও জয়ী হতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

আন্দোলনে যারা ব্যর্থ, নির্বাচনেও জয়ী হতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী

সদ্যঃসমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যফন্টের ভরাডুবির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে যারা ব্যর্থ, তারা কখনো নির্বাচনে জয়ী হতে পারে না।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিএনপি নিজেদের কারণেই নির্বাচনে হেরেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নবাণিজ্য এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে রীতিমতো তা অকশনে পরিণত হয়। সকাল-বিকাল প্রতিটি আসনে কয়েকজনকে প্রার্থী ঘোষণা দেয় তারা। যখন যে বেশি টাকা দিয়েছে তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। একটা দল যখন সিট অকশনে দেয় সেখানে আর কী হবে? জয়ের আশা করে কিভাবে?’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) জামায়াত ইসলামীকে মনোনয়ন দিয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধীদের দলকে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। তারা তাদের ভোট দেয়নি। এ পরাজয়ের কারণ তাদেরই (বিএনপি) খুঁজে বের করতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি কেন নির্বাচনে হেরেছে সেটা তাদের নিজেদেরও ভাবা উচিত। কেননা, তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তাণ্ডব চালিয়েছে। অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। যানবাহন পুড়িয়েছে। ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়ে ঘরে ফেরবেন না বলে ঘরে ফিরে গেলেন। সেই ধর্মঘট এখনো আছে! আবারও নির্বাচন প্রতিরোধের নামে নৃশংসতা চালালেন। জনগণ তাদের সেই সহিংস আন্দোলন ব্যর্থ করে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দলটির প্রধান এতিমের টাকা চুরি করে জেলে। আবার তিনি জেলে যাওয়ার পর এমন একজনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হলো, যিনি নিজেই দুর্নীতি ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বিএনপির এসব তৎপরতার কারণে নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছর আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষা। যে উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছি, এটা আমরা অব্যাহত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। জনগণ আমাদের ওপরে আস্থা-বিশ্বাস রেখেছে। এই বিশ্বাসকে মর্যাদা দিয়ে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলব।’ তিনি বলেন, ‘আজকে জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই। তাঁর আদর্শ বুকে নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাই, এ দেশের যে উন্নতি আমরা করেছি এবং সেটা যেন আরো অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে। আজ জাতির পিতা সশরীরে আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তিনি আছেন। এই ৫৪ হাজার বর্গমাইলের সব জায়গায় তিনি আছেন।’ এ সময় বঙ্গবন্ধুকন্যা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি জানি না, কিন্তু সেটা আমি উপলব্ধি করতে পারি, তিনি আছেন। নইলে আমার পক্ষে এত দ্রুত দেশের উন্নতি করা বা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে এতটা অর্জন করা কখনো সম্ভব হতো না। আমি সব সময় মনে করি, আমার বাবা-মা, আমাকে সব সময় ছায়া দিয়ে রেখেছেন বলেই আজকে এটা সম্ভব হচ্ছে এবং নিশ্চয়ই তিনি বেহেশত থেকে দেখেন।’ নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ দেশের মানুষ পেট ভরে ভাত খাবে, তাদের বাসস্থান হবে, চিকিৎসা, শিক্ষার সুযোগ হবে, উন্নত জীবন পাবে এটাই তো ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য, একমাত্র উদ্দেশ্য। বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষকে খুব ভালোবাসতেন। এ দেশের বঞ্চিত জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি মহৎ আত্মত্যাগ করে গেছেন। সেই আত্মত্যাগ আমাদের ভুললে চলবে না। আমাদের সেটাই অনুসরণ করে চলতে হবে এবং দেশের মানুষ যদি ভালো থাকে, দেশের মানুষ যদি সুন্দর জীবন পায়, এর থেকে বড় সার্থকতা একজন রাজনীতিবিদের জীবনে আর কিছু হতে পারে না।’ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। সূচনা বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, আব্দুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।
ছয় মাসে এনবিআরের ঘাটতি ২৯ হাজার কোটি টাকা পূর্ববর্তী

ছয় মাসে এনবিআরের ঘাটতি ২৯ হাজার কোটি টাকা

গণতন্ত্রের সূচকে চার ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ পরবর্তী

গণতন্ত্রের সূচকে চার ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ

কমেন্ট