করোনায় রক্ত জমাট: মৃত্যুঝুঁকি এড়াবেন যেভাবে

করোনায় রক্ত জমাট: মৃত্যুঝুঁকি এড়াবেন যেভাবে

করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে শরীরের সর্বত্র রক্ত জমাটবদ্ধতা, চিকিৎসকেরা যাকে থ্রম্বোসিস বলেন। নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ থেকে ৩০ শতাংশ গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীর রক্ত জমাটবদ্ধতা ছিল। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ রোগী মারা গেছেন। চিকিৎসকেরা কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে পরিমিত ডোজে রক্ত পাতলাকারী ওষুধ ব্যবহার করেও কার্যকর ফল পাচ্ছেন না। অন্যদিকে মেগাডোজ দিলে বিপদজ্জনক রক্তক্ষরণের ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকেরা রোগীদের রক্ত জমাটবদ্ধতা প্রতিরোধে ঝুঁকিমুক্ত চিকিৎসা উদ্ভাবনের প্রচেষ্টায় আছেন। কিন্তু এই প্রচেষ্টা কবে সফল হবে জানা নেই বলে আমাদেরকে আপাতত ঘরোয়া চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। করোনায় রক্ত জমাট থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে ঘরোয়া করণীয় নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব। অলিভ অয়েল মালিশ করুন: রক্ত জমাটের চিকিৎসায় রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে অলিভ অয়েল মালিশ করলে প্রদাহরোধী উপাদান ত্বকের মাধ্যমে শোষিত হয়ে রক্তনালীর ফোলা কমায় ও রক্তপ্রবাহ সক্রিয় হয়। অলিভ অয়েলে উচ্চ পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই ও মিনারেলও রয়েছে, যা রক্তনালীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েলকে গরম করুন। এবার একটি কটন প্যাডে এই তেল লাগিয়ে কিছুক্ষণ মালিশ করুন। দিনে দু’বার পুনরাবৃত্তি করুন। মরিচ গুঁড়ার শরবত পান করুন: লাল মরিচ গুঁড়ার শরবত হতে পারে রক্ত জমাটবদ্ধতার জাদুকরী ঘরোয়া চিকিৎসা। অ্যালার্জি, ভাইরাস সংক্রমণ, আর্থ্রাইটিস ও অন্যান্য প্রদাহজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় এই শরবত পান করলে উপকার পাওয়া যায়। লাল মরিচের গুঁড়া সেসব ফ্যাক্টরকে বাধা দেয় যা রক্তকে জমাট বাঁধতে কাজ করে। এককাপ গরম পানিতে এক চা-চামচ লাল মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে নাড়ুন। এই মিশ্রণ দিনে তিনবার পান করুন। ভিটামিন ই গ্রহণ করুন: ভিটামিন ই হলো একটি অ্যান্টিকোয়াগিউল্যান্ট, অর্থাৎ এই পুষ্টিও রক্ত জমাট বাঁধার পথে প্রতিবন্ধক হতে পারে। ভিটামিন ই সংবহন সংক্রান্ত হৃদরোগ ও স্ট্রোকের বিরুদ্ধে সহায়ক। হার্ট ও রক্তনালীর সমস্যা (যেমন- বুক ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ ও ধমনীর ব্লক) এড়াতে বা চিকিৎসায় এই পুষ্টি ব্যবহার করা হয়। করোনায় রক্ত জমাটে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে আপনার ডায়েটে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার যোগ করতে পারেন, যেমন- আমন্ড, আম, সূর্যমুখী বীজ, ব্রোকলি, পালংশাক ও টমেটো। রসুন ব্যবহার করুন: হার্ট ও সংবহনতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অনেক স্বাস্থ্য সমস্যায় রসুন ব্যবহার করা হয়। রসুন পিষলে বা কুচিকুচি করে কাটলে অ্যালিসিন ও আজোইন নামক সালফারাস কম্পাউন্ড তৈরি হয়, যা রক্তের সংবহন বাড়াতে পারে। রক্তনালীর প্রদাহ ও রক্ত জমাটবদ্ধতা প্রতিরোধে অ্যালিসিন ও আজোইন ভূমিকা রাখতে পারে। জার্নাল অব পোস্টগ্রাজুয়েট মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, থ্রম্বোসিস তথা রক্ত জমাটবদ্ধতা প্রতিরোধে কাঁচা রসুন বেশ কার্যকর হতে পারে। রোদ পোহান: একটি গবেষণায় ৬৬ শতাংশ থ্রম্বোসিস রোগীর মধ্যে ভিটামিন ডি ঘাটতি পাওয়া গেছে। ইরানের একটি গবেষণাও সাজেস্ট করছে, পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমাতে পারে। ভিটামিন ডি এর অ্যান্টিকোয়াগিউল্যান্ট ইফেক্ট পেতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিনিট রোদ পোহাতে পারেন। আপনি খুব ফর্সা হলে ১৫ মিনিটের বেশি রোদ পোহাবেন না। কতক্ষণ রোদ পোহাবেন তা নির্ভর করে ত্বকের ডার্কনেসের মাত্রার ওপর। ত্বক যত ডার্ক হবে, তত বেশি সময় রোদে থাকতে হয়। ত্বক খুব ডার্ক বা কালো হলে ঘণ্টাখানেক রোদে থাকুন। এটা উল্লেখ্য যে, শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদনে কতক্ষণ রোদে থাকা উচিত তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতভেদ রয়েছে।
করোনা থেকে বাঁচার পর হাসপাতাল বিল সাড়ে ৯ কোটি টাকা পূর্ববর্তী

করোনা থেকে বাঁচার পর হাসপাতাল বিল সাড়ে ৯ কোটি টাকা

চুল কাটতে ৮৫ হাজার টাকা, তবুও ১০০০ জনের সিরিয়াল! পরবর্তী

চুল কাটতে ৮৫ হাজার টাকা, তবুও ১০০০ জনের সিরিয়াল!

কমেন্ট