চট্টগ্রাম ইপিজেডে বন্ধ কারখানা নতুন মালিকানায় চালু

চট্টগ্রাম ইপিজেডে বন্ধ কারখানা নতুন মালিকানায় চালু

সমুদ্রবন্দর ও ভৌগোলিক সুবিধার কারণে চট্টগ্রাম ইপিজেডে একটি শিল্প প্লট পাওয়া মানে উদ্যোক্তাদের জন্য স্বপ্নের ব্যাপার। সেখানে কি না এই ইপিজেডেই প্রায় ৩০টি প্লটে ১০টির বেশি কারখানা উৎপাদনে নেই? শুরুতে শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তবতা। তবে আশার কথা এর মধ্যে অন্তত ছয়টি কারখানা আগামী এক বছরে মালিকানা পরিবর্তন হয়ে উৎপাদনে আসছে। বাকি বন্ধ কারখানাগুলোকেও নিলামের মাধ্যমে মালিকানা পরিবর্তন করে উৎপাদনে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। কারখানাগুলো উৎপাদনে এলে চট্টগ্রাম ইপিজেডে নতুন করে আরো ৩০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বেপজা সূত্র জানায়, বন্ধ থাকা কারখানার মধ্যে এ বছরেই কুরুকি চেইন, ইয়াং ইন্টারন্যাশনাল, নর্থপোল (সিইপিজেড), গ্রে ফ্যাব্রিকস, অ্যারো জিন্স নতুন মালিকানায় নতুন নাম নিয়ে উৎপাদনে আসবে। এ ছাড়া পোর্টল্যান্ড টেক্সটাইল, ডিলাইট নিটিং, নর্থপোল বিডি, চুনজি ইন্ডাস্ট্রিজ ও কিমটেক্স লিমিটেড বিক্রির জন্য নিলাম ডেকেছে বেপজা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া গত জুনে বন্ধ হয়ে যাওয়া পেনিনসুলা গার্মেন্টসটিও বিক্রির জন্য আলোচনা চলছে চট্টগ্রামের একটি স্বনামধন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বেপজা কর্তৃপক্ষ আশা করছে, আগামী বছরের মধ্যে এসব কারখানাও নতুন নাম আর মালিকানা নিয়ে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করবে। এতে অন্তত ৩০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। বেপজার ৩৫ বছরের পুরনো চারটি একতলা ভবন ভেঙে প্রতিটি ছয়তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। বেপজা আশা করছে, আগামী বছর থেকে এসব ভবন বরাদ্দ দিতে পারবে। তখন এসব ভবনে আরো ১৬ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। বেপজা থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৯৮৪ সালের প্রতিষ্ঠিত ৪৫৩ একরের দেশের প্রথম ও সবচেয়ে বড় চট্টগ্রাম ইপিজেডে বর্তমানে ১৭১টি কারখানা উৎপাদনে আছে। এসব কারখানায় দুই লাখ এক হাজার ৭৯৮ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। গত অর্থবছরে শুধু এই ইপিজেড থেকে রপ্তানি হয়েছে ২৪৪ কোটি ৩০ লাখ ডলারের পণ্য, যা দেশের মোট জাতীয় রপ্তানি তিন হাজার ৬৬৬ কোটি ডলারের ৬.৬৬ শতাংশ। জানা গেছে, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদামতো কারখানা সংস্কার করতে না পারায় ক্রেতা হারিয়ে বন্ধ হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার মালিকানাধীন ইয়াং ইন্টারন্যাশনাল। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিকের সাতটি প্লটের এই কারখানায় বন্ধ হওয়ার আগে সর্বশেষ ২০১৩-১৪ অর্থবছরেও পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩৩৪ কোটি টাকার। সর্বশেষ গত বছর কারখানাটি কিনে নেয় বাংলাদেশের সিলেটি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক এফসিআই (বিডি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ মতিন। এই কম্পানির ঢাকা ইপিজেডেও কারখানা রয়েছে। হংকংভিত্তিক নর্থপোল বিশ্বব্যাপী দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম ইপিজেডে অবস্থিত গ্রুপের ৫ ও ৩ প্লটের দুটি কারখানা বন্ধ হয়েছিল ২০১২ সালে। এরপর নিলামের মাধ্যমে নর্থপোল (সিইপিজেড) কারখানাটি কিনে নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক লয়্যাল টেক্স গ্রুপ। নর্থপোলের অন্য কারখানাটি বিক্রির জন্যও নিলাম ডাকা হয়েছে। ৩০ বছরের পুরনো জাপানি প্রতিষ্ঠান কুরুকি চেইন কিনে নিয়েছে ইয়াংওয়ান গ্রুপ। আর অ্যারো জিন্স কর্তৃপক্ষ নিজেরাই কারখানাটি দীর্ঘদিন পর চালু করছে। এ প্রসঙ্গে বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর বলেন, ‘এটা বেপজার প্রতি আস্থারই বহিঃপ্রকাশ। কারণ যাঁরা এই বন্ধ কারখানাগুলো কিনে নতুন করে বিনিয়োগ করছেন তাঁরা প্রায় সবাই এরই মধ্যে বেপজারই বিনিয়োগকারী।’ বেপজার পুরনো ভবন ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীরই নির্দেশনা আছে যেহেতু ইপিজেডে জায়গা বাড়ানোর সুযোগ নেই, তাই উঁচু ভবন করে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা। বেপজা তাঁর পরামর্শ অনুযায়ীই ব্যবস্থা নিয়েছে।’ প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘চট্টগ্রাম ইপিজেডে সব প্লট বিক্রি হয়ে গেছে অনেক আগেই। তাই যাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে তাদের বন্ধ থাকা কারখানা কেনা ছাড়া উপায় নেই।’
গত ৮ মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ পূর্ববর্তী

গত ৮ মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ

আমিরাতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪টি সমঝোতা স্মারক সই পরবর্তী

আমিরাতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪টি সমঝোতা স্মারক সই

কমেন্ট