ছুটি হয়ে যাচ্ছে গৌরবের শেষ ত্রয়ীরও!

ছুটি হয়ে যাচ্ছে গৌরবের শেষ ত্রয়ীরও!

ছুটি হয়ে যাচ্ছে গৌরবের শেষ ত্রয়ীরও! লাল-সবুজের আলো ঝলমলে অধ্যায়ের তিন অংশীদারকে সত্যি সত্যি ছেঁটে ফেললে কম্বোডিয়ায় এক রকম নতুন শুরু হবে বাংলাদেশ ফুটবলের। ওয়ালি ফয়সাল, মামুনুল ইসলাম ও তৌহিদুল আলম সবুজ। হালের ফুটবল ক্ষয়ে গেলেও নয় বছর আগে তাদের পায়েই রঙিন হয়েছিল এদেশের ফুটবল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তারা রূপ-রসে ভরিয়ে তুলেছিল ২০১০ এসএ গেমস ফুটবল। ফাইনালে আফগানিস্তানকে ৪-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো জেতে এসএ গেমসের সোনা। আর সেটাই বাংলাদেশ ফুটবলের সর্বশেষ বড় অর্জন এবং গৌরব। দলটি ছিল অনূর্ধ্ব-২৩ আর সেই গৌরবের অংশীদাররাই ছিলেন এতদিন সিনিয়র জাতীয় দলের অংশ। ছিলেন ফুটবলের সুখ-দুঃখের সারথী হয়ে। পারফরম্যান্সে ভাটার টানে তারা বিদায় নেন এক এক করে। শেষপর্যন্ত টিকে ছিলেন ওই তিন তারকা। ছিলেন গত অক্টোবর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের দলে। কম্বোডিয়ার দল ঘোষনায় হয়তো-বা একসঙ্গেই ছুটির ঘণ্টা বাজবে তিন জনের ! জাতীয় দলের বৃটিশ কোচ জেমি ডে এখন দেশে নেই, কয়েকদিনের মধ্যেই এসে পড়বেন। তবে চূড়ান্ত করে গেছেন ২৩ জনের দল। যেরকম খবর মিলছে, তাতে লাল-সবুজের জার্সি আর গায়ে উঠছে না ত্রি-রত্নের। তাই বলে রত্নকে তো অস্বীকার করা যায় না। ‘সময়ে সবাইকে থামতে হবে। সারা জীবন তো কেউ খেলতে পারে না। আমার কোনো ক্ষোভ নেই’---- বলেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। কিছুদিন আগেও তার হাতে ছিল লাল-সবুজের আর্মব্যান্ড, সেই দল ছাড়ার কষ্ট থাকলেও এক সময়ের দেশ সেরা মিডফিল্ডারের স্মৃতিতে গৌরবের মাখামাখি, ‘আমি গর্ব করে বলতে পারি, এসএ গেমসের স্বর্ণ উপহার দিয়েছি দেশকে। এরপর যতদিন জাতীয় দলে খেলেছি, আশিভাগ গোলের অ্যাসিস্ট আমার। সুতরাং আনন্দের মুহুর্ত অনেক আমার।’ সেই এসএ গেমস দলে আরেক সতীর্থ তৌহিদুল আলম সবুজকেও পাসপোর্ট জমা দিতে বলেনি বাফুফে। অর্থাৎ এই ফরোয়ার্ডেরও ছুটি হয়ে যাচ্ছে লাল-সবুজের দল থেকে। তার কাছে জাতীয় দল বিস্ময়-ভরা এক বস্তু। লিগে গোল করেও জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেননি। লিগে দেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ গোল করার পরও এই স্ট্রাইকারকে বাদ দিয়ে অন্যকে ডাকে কোচ। এজন্য বসুন্ধরা কিংসের এই ফরোয়ার্ডের মনে আক্ষেপ থাকলেও মন রাঙিয়ে যায় এসএ গেমসের গর্ব, ‘গোল করার পরও বিদেশী কোচরা কেন আমাকে অবজ্ঞা করতো জানি না। তবে এসএ গেমসে ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনাল জেতানো একমাত্র গোলটি আমার। ফাইনালেও ছিল একটি গোল। কেউ চাইলেও তো এগুলো মুছে ফেলতে পারবে না। সুতরাং এই ট্রফি আমার আমার ফুটবল ক্যারিয়ারের অনন্য এক অর্জন।’ নাম্বার নাইন পজিশনে তার চেয়ে ভাল স্ট্রাইকার এই মুহুর্তে দেশে নেই। বিদেশী-খচিত কিংসে তাই একাদশে ঢোকা একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে তার জন্য। সবুজ আছেন সুযোগের অপেক্ষায়, ‘মাঠে নামার সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে, গোল করে আবার প্রমাণ করতে হবে নিজেকে।’ তৃতীয় জন ওয়ালি ফয়সাল। বলা উচিত প্রথমজন, কারণ তিন জনের মধ্যে সিনিয়র তিনি। ২০১০ এসএ গেমস খেলেন তিন সিনিয়র ফুটবলের একজন হয়ে। এখনো তিনি আবাহীর নিয়মিত একাদশের লেফট ব্যাক। নতুনদের সঙ্গে দমের লড়াইয়ে হয়তো সবসময় কুলিয়ে উঠতে পারেন না কিন্তু তার বাঁ পায়ের নিখুঁত ক্রসগুলো আগের মতো বিষ-মাখানো। প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ংকর। কিন্তু বৃটিশ কোচ জেমি ডে’র কাছে দমই যে শেষ কথা। তার কোচিং দর্শনই হলো, দৌড়-ঝাঁপ করে খেলা। তাই আরামবাগের তরুণ ফরোয়ার্ড আরিফুল ও শেখ রাসেলের মিডফিল্ডার সোহেল রানাকে রেখেছেন দলে। টেকনিক্যাল দক্ষতা যাই হোক, তাদের দৌড়-ঝাপ করে খেলায় প্রতিপক্ষের খেলা তো গুলিয়ে যাবে। এ কারণেই হয়তো গৌরবের শেষ তিন তারকাকে বিদায় দিয়ে কোচের তারুণ্যে নির্ভরতা।
মেসির হ্যাটট্রিকের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ববর্তী

মেসির হ্যাটট্রিকের হাফ সেঞ্চুরি

চিকিৎসার জন্য ব্রাজিলে পাঠানো হলো নেইমারকে পরবর্তী

চিকিৎসার জন্য ব্রাজিলে পাঠানো হলো নেইমারকে

কমেন্ট