জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। ২৫টি আসনের বিপরীতে নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী গ্র্যাজুয়েটদের একাংশের প্যানেল ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। রবিবার ভোর ৫টায় রিটার্নিং অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক সাময়িকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরিফ এনামুল কবীর ও কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার নেতৃত্বাধীন এই প্যানেল 'শরিফ-মোতাহার' প্যানেল নামেই বেশি পরিচিত। ২৫ টি আসনের মধ্যে এই প্যানেল থেকেই বিজয়ী হয়েছেন মোট ১৮ জন। অপরদিকে, বিএনপন্থী গ্র্যাজুয়েটদের ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী’ প্যানেল পেয়েছে ৬টি আসন। এদিকে, আওয়ামীপন্থী গ্র্যাজুয়েটদের অপর অংশ ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীল গ্র্যাজুয়েট মঞ্চ’ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র ১ জন। একমাত্র বিজয়ী ব্যক্তি হলেন- মো. আব্দুল মান্নান চৌধুরী (প্রাপ্ত ভোট-১০২৭)। এছাড়া স্বতন্ত্র ৪৪ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে কেউই নির্বাচিত হননি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’ প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা হলেন- কেএইচ মাহিদ উদ্দিন (প্রাপ্ত ভোট-২১৪৪), মো. কায়কোবাদ হোসাইন (প্রাপ্ত ভোট-১৮৭৩), শরীফ এনামুল কবীর (প্রাপ্ত ভোট-১৬৮৫), ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীর (প্রাপ্ত ভোট-১৪৫৭), মো. সোহেল পারভেজ (প্রাপ্ত ভোট-১৪৩৪), আশীষ কুমার মজুমদার (প্রাপ্ত ভোট-১৪৩২), শামীমা সুলতানা (প্রাপ্ত ভোট-১৪১১), কৃষ্ণা গায়েন (প্রাপ্ত ভোট-১৪০২), পৃথ্বিলা নাজনীন নীলিমা (প্রাপ্ত ভোট-১৩৯৬), মহব্বত হোসেন খান (প্রাপ্ত ভোট-১২৩৮), শেখ মনোয়ার হোসেন (প্রাপ্ত ভোট-১১৯৪), মো. মোতাহার হোসেন (প্রাপ্ত ভোট-১১৩১), আবুল কালাম আজাদ (প্রাপ্ত ভোট-১১১৫), মোহাম্মদ মেহেদী জামিল (প্রাপ্ত ভোট-১০৮২), মো. এবায়দুল্লাহ তালুকদার (প্রাপ্ত ভোট-১০৭৭), ইন্দুপ্রভা দাস (প্রাপ্ত ভোট-৯৯৪), মো. মাসুদুর রহমান (প্রাপ্ত ভোট-৯৮০) এবং মো. আনোয়ার হোসেন মির্ধা (প্রাপ্ত ভোট-৯৭৫) টি ভোট পেয়েছেন। বিএনপিপন্থী প্যানেল থেকে ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান (প্রাপ্ত ভোট-১৩৪২), শিহাব উদ্দিন খান (প্রাপ্ত ভোট-১৩০৭), শামীমা সুলতানা (প্রাপ্ত ভোট-১২০৭), মো. শামসুল আলম সেলিম (প্রাপ্ত ভোট-১১৮৪), সাবিনা ইয়াসমিন (প্রাপ্ত ভোট-১০৩০), ড. মো. নজরুল ইসলাম (প্রাপ্ত ভোট-১০১০) নির্বাচিত হয়েছেন। ফল প্রকাশের পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’ প্যানেলের পক্ষে অধ্যাপক শরিফ এনামুল কবীর বলেন, "নির্বাচনের আগে আমরা যেসব সংকল্প করেছিলাম, সেগুলো বাস্তবায়ন করবো। প্রথমে আমরা ক্যাম্পাসে বাণিজ্যিক পরিবেশ দূরীকরণে কাজ করবো। জাকসু নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা আমাদের অন্যতম প্রতিশ্রুতি। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে আমরা তৎপর থাকবো। " জাতীয়তাবাদী প্যানেলের পক্ষে অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে দল-মত নির্বিশেষে আমরা একত্রে কাজ করবো। জাকসু নির্বাচনসহ সব প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর। " রিটার্নিং অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক বলেন, "সাময়িক ফল ঘোষণার তিন কার্যদিবসের মধ্যে কোনও প্রার্থী লিখিত অভিযোগ না করলে, এই ফলই চূড়ান্ত ফল বলে গণ্য হবে। " প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে জাবির সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৩ বছর পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ ১৯ বছর পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল গতকাল শনিবার। উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল ৯টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ চলে। ৪৩৭৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৩৬৩৫ জন গ্র্যাজুয়েট। ফলে ৮৩% ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ২৫টি আসনের বিপরীতে লড়েছেন ১১৯ জন প্রার্থী। আওয়ামীপন্থী গ্র্যাজুয়েটরা দু’টি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে এবং বিএনপিপন্থী গ্র্যাজুয়েটরা একক প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ৪৪জন।
ঠান্ডা, শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত পূর্ববর্তী

ঠান্ডা, শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ পরবর্তী

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

কমেন্ট