ঢাবিতে ভর্তির প্রলোভন, যুবককে ধরিয়ে দিল ছাত্রলীগ

ঢাবিতে ভর্তির প্রলোভন, যুবককে ধরিয়ে দিল ছাত্রলীগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল থেকে এই প্রতারককে ধরিয়ে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আটক যুবকের নাম জুয়েল। তিনি ঢাকা কলেজের ছাত্র বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, প্রতারণার শিকার ছাত্রের নাম ইমন। তাঁর গ্রামের বাড়ি সিলেটে। জানা যায়, ভুক্তভোগী ইমন ভর্তি পরীক্ষার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসেন। ঘোরাফেরার একপর্যায়ে পরিচয় হয় জুয়েলের সঙ্গে। জুয়েল নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেন এবং ইমনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখান। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ পয়েন্ট কম থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সম্ভব নয় বলে জানান ইমন। কিন্তু টাকা দিলে নিজের পরিচিত লোকের মাধ্যমে পয়েন্ট বাড়িয়ে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেবেন বলে কথা দেন জুয়েল। জুয়েলের খপ্পরে পড়ে বাড়িতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আশায় দুইবারে ২০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠান ইমন। এরপর জুয়েল বিভিন্ন ধরনের কথা বলে আরো টাকা দিতে বলেন। সোমবার দুপুরে জুয়েলের প্রতারণার বিষয়টি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে জানান ইমন। পরে তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিলে তাঁরা জুয়েলকে ধরে প্রক্টর টিমের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল ঘটনাটি স্বীকার করেন। তিনি পল্টন এলাকায় থাকেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাঁর নিয়মিত আসা-যাওয়া আছে বলে জানান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, প্রতারণার বিষয়টি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে জানালে তিনি জুয়েলের খোঁজখবর নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। জুয়েল হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে মাঝেমধ্যে অবস্থান করেন বলেও জানতে পারেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাঁর বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে সোমবার সন্ধ্যায় মুহসীন হলে জুয়েলের খোঁজ পান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাঁকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভুক্তভোগী ইমন বলেন, ‘ওই দিন আমি বন্ধুদের সঙ্গে ঢাবিতে ঘুরতে ছিলাম। একপর্যায়ে জুয়েল আমাকে ডেকে নিয়ে যান এবং ঢাবিতে ভর্তি করিয়ে দেবে বলেন। আমি এটা সম্ভব না বললেও তিনি আমাকে বিভিন্নভাবে আশ্বাস দিতে থাকেন। পরে আমি তাঁর বিকাশে ২০ হাজার টাকা দিলে তিনি আরো টাকা দাবি করেন। আমাকে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে বুঝতে পারি।’ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘বিষয়টি শুনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জানানো হয়। তাঁরা মুহসীন হল থেকে জুয়েলকে ধরে প্রক্টর টিমের হাতে দেন। আমরা খোঁজ নিতে বলেছি তাঁর পেছনে কে বা কারা আছে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘দুইজনকে ধরা হয়েছে। তারা দুজনই বহিরাগত। তাদের একজন প্রতারক। তাদের মুহসীন হল থেকে ধরা হয়েছে। হল প্রশাসন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশে দিতে বলা হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল, সবকিছু জেনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। পরে উভয়কেই পুলিশে দেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত জেনে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহেব আলী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুজনকে পুলিশে দিয়েছে। তাদের একজন অভিযুক্ত। ভুক্তভোগীর অভিযোগে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পৌনে ৪ কোটি টাকার মোবাইলের মালিকানা নেই ! পূর্ববর্তী

পৌনে ৪ কোটি টাকার মোবাইলের মালিকানা নেই !

চাকরির নামে সাড়ে ১১ লাখ আদায়, ইবির কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত পরবর্তী

চাকরির নামে সাড়ে ১১ লাখ আদায়, ইবির কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত

কমেন্ট