তিন খান খানখান, শীর্ষে দুই রণবীর

তিন খান খানখান, শীর্ষে দুই রণবীর

বলিউডের তিন খান—সালমান খান, শাহরুখ খান ও আমির খান। তিনজনই বাণিজ্যসফল অভিনেতা। টানা ১৭ বছর তিন খান বক্স অফিসে তাঁদের শাসন জারি রেখেছিলেন। ‘ছিলেন’ বলতে হচ্ছে এ কারণে, এই শাসন এখন অতীত হয়ে গেছে! এই বদলানোর বছর সদ্য বিদায়ী ২০১৮। মনে হচ্ছে, হিন্দি চলচ্চিত্রের দর্শকের মনও বদলে গেছে। যদিও তিন খানের ভক্ত ও অনুরাগীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে একটুও ভাটা পড়েনি। তবে মনে হচ্ছে, চলচ্চিত্র বাণিজ্যে এর প্রভাব কমতে শুরু করেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, ২০১৮ সালে এই তিন খানের সিনেমা সাফল্য পায়নি। ২০১৮ সালে নিজেকে প্রথম উপস্থাপন করেছিলেন সালমান খান। জনপ্রিয় সিনেমা ‘রেস’ ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় কিস্তিতে নিজের ব্যক্তিত্ব নিয়ে হাজির হন এই সুপারস্টার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর আগের কিস্তির সাইফ আলি খানকে টপকাতে পারেননি তিনি। বক্স অফিসে সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হয় বলিউড ভাইজানের ‘রেস-৩’। এই ব্যর্থতা অবশ্য সালমানের একার নয়, নির্মাতা রেমো ডি সুজারও। আকর্ষণীয় চরিত্রায়ণ করতে পারেননি তিনি, তাই দর্শক এই ছবি দেখে পুরো হতাশ হন। গত বছর আমির খান হাজির হন বিশাল বাজেটের ছবি ‘থাগস অব হিন্দোস্তান’ নিয়ে। বড় উৎসব দীপাবলিতে মুক্তি পায় ছবিটি। প্রথম দিনে বক্স অফিসে আয়ের রেকর্ড গড়লেও এর পর থেকে কমতে শুরু করে সংগ্রহ। যদিও আমির খান তাঁর অভিনয়ের জন্য ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তবে ছবিটি দর্শককে টানতে পারেনি। সবচেয়ে হতাশার ব্যাপার হলো, প্রথমবারের মতো মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন ও আমির খান একসঙ্গে কাজ করলেও প্রেক্ষাগৃহে দর্শক টানতে ব্যর্থ হয়েছে ছবিটি। ছিলেন ক্যাটরিনা কাইফও। তাঁর নাচ ঝড় তুলেছিল অন্তর্জালে। যা হোক, ‘ধুম-৩’ পরিচালক বিজয়কৃষ্ণ আচার্যের কাছে দর্শকের প্রত্যাশা ছিল আরো অনেক। এর পর বলিউড অনুরাগীরা আশা করেছিলেন, বড়দিনে মুক্তি পাওয়া শাহরুখ খানের ‘জিরো’ সাড়া ফেলতে সক্ষম হবে। আনন্দ এল রাই পরিচালিত এই ছবিতে শাহরুখ বামন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, ২০০ কোটি রুপি বাজেটের এই সিনেমাকে ১০০ কোটি রুপি আয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এখনো। ২০০৭ ছিল শাহরুখ খানের সেরা বছর। ‘ওম শান্তি ওম’ ও ‘চাক দে! ইন্ডিয়া’ ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছিল। ২০০৮ সালেও শাহরুখের ‘রব নে বানা দি জোড়ি’ প্রত্যাশিত আয় করেছিল। তবে ‘রা ওয়ান’ হয়েছিল ফ্লপ। ২০১৩ সালে তাঁর অভিনীত ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ আয় করেছিল ২২৭.১৩ কোটি রুপি। ২০১৪ সালে দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে জুটি বাঁধা ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ আয় করেছিল ২০৩ কোটি রুপি, যা ওই বছরে বক্স অফিসে তৃতীয় নাম্বারে ছিল। ২০০৮ সালে আমির খান অভিনীত ‘গজিনি’ মুক্তি পেয়েছিল, বক্স অফিসে আয় করেছিল ১১৪ কোটি রুপি; যা ওই বছরে বক্স অফিসে ছিল প্রথম অবস্থানে। ২০০৯ সালে তাঁর ‘থ্রি ইডিয়টস’ আয় করে ২০২.৯৫ কোটি রুপি। ২০১৩ সালে আমির অভিনীত ‘ধুম-৩’ আয় করেছিল ২৮৪.২৭ কোটি রুপি। এখানেই থেমে থাকেননি আমির। ২০১৪ সালে তাঁর ‘পিকে’ আয় করে ৩৪০.৮০ কোটি রুপি। আর ২০১৬ সালে শুধু ভারতের বক্স অফিসে ‘দঙ্গল’ আয় করে ৩৮৭.৩৮ কোটি রুপি। দীর্ঘদিন ধরে বক্স অফিসে সাফল্য ধরে রাখলেও ২০১৮ সালে ব্যর্থ হন সালমান খান। ২০১০ সালে ‘দাবাং’ আয় করে ১৩৮.৮৮ কোটি রুপি। ২০১১ সালে ‘বডিগার্ড’ আয় করে ১৪৮.৮৬ কোটি রুপি ও ‘রেডি’ আয় করে ১১৯.৭৮ কোটি রুপি। ২০১২ সালে ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে জুটি বাঁধা ‘এক থা টাইগার’ আয় করে ১৯৮.৭৮ কোটি রুপি আর ‘দাবাং-২’ আয় করে ১৫৫ কোটি রুপি। ২০১৪ সালে ‘কিক’ দিয়ে ২০০ কোটির ক্লাবে ঢোকেন সালমান, এই ছবি আয় করে ২৩১.৮৫ কোটি রুপি। যা হোক, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বলিউড শাসন করেন সালমান। তাঁর ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ আয় করে ৩২০.৩৪ কোটি রুপি, ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’ আয় করে ২১০.১৬ কোটি রুপি, ‘সুলতান’ আয় করে ৩০০.৪৫ কোটি রুপি এবং ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ আয় করে ৩৩৯.১৬ কোটি রুপি। ২০১৮ সালে তিন খান ব্যর্থ হলেও বক্স অফিসে ঝড় তুলেছেন দুই রণবীর—রণবীর কাপুর ও রণবীর সিং। গেল বছরে রণবীর কাপুরের ‘সঞ্জু’ সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমা। বক্স অফিসে এর আয় ৩৪২.৫৩ কোটি রুপি। আর রণবীর সিং অভিনীত ‘পদ্মাবত’ আয় করে ৩০২.১৫ কোটি রুপি। গত ২৮ ডিসেম্বর মুক্তি পায় রণবীর সিং অভিনীত ‘সিম্বা’। এ ছবি মাত্র ১০ দিনে আয় করে ১৭৩.১৫ কোটি রুপি। ব্ক্স অফিস ইন্ডিয়ায় ২০০ কোটির ক্লাব ছুঁতে আর বেশি দেরি নেই এ ছবির। ২০১৯ হবে চমকপ্রদ বছর, এমনটাই আশা করছেন বি-টাউন অনুরাগীরা। তিন খান সালমান-শাহরুখ-আমির কি যথাক্রমে ‘ভারত’, ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা’ ও ‘মহাভারত’ দিয়ে ফের পাদপ্রদীপের আলোয় আসবেন? নাকি ‘গাল্লি বয়’ ও ‘৮৩’ দিয়ে বক্স অফিস কাঁপাবেন রণবীর সিং? নাকি রণবীর কাপুরের ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ সুপারডুপার হিট হবে? অপেক্ষা করুন, দেখুন!
দীপিকার আশীর্বাদ পূর্ববর্তী

দীপিকার আশীর্বাদ

সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চান অপু পরবর্তী

সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চান অপু

কমেন্ট