দেশে এলো কলকাতায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ

দেশে এলো কলকাতায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ

ভারতের কলকাতায় শুক্রবার গভীর রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ রবিবার সকাল ৯টার সময় বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ফেরত এসেছে বাংলাদেশে। বেনাপোল চেকপোস্টে লাশ আসার পর স্বজনদের আজাহারিতে গোটা এলাকা ভারি হয়ে ওঠে। কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সেরে লাশ দুটি নিয়ে বাড়ির রওনা দেন স্বজনেরা। লাশ হস্তান্তরের সময় চেকপোস্ট নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় ভারতীয় বিএসএফ, পুলিশ, কাস্টমস ও বাংলাদেশি ইমিগ্রেশন পুলিশ, বিএসএফ ও কাস্টমসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নিহত দুই বাংলাদেশি হলেন ঝিনাইদাহ জেলার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে কাজি মোহাম্মাদ মঈনুল আলম (৩৬) ও কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থানার চান্দুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে ফারহানা ইসলাম তানিয়া (৩০)। কলকাতার সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, শুক্রবার গভীর রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে শেক্সপিয়র সরণি ও লাউডন স্ট্রিটের সংযোগস্থলে। একটি দ্রুতগামী গাড়ি শেক্সপিয়র সরণি ধরে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের দিক থেকে কলামন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড গতি নিয়ে ধাক্কা দেয় একটি মার্সিডিজকে। এরপর জাগুয়ারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুই পথচারীকে পিষে দেয়। গুরুতর আহত ওই দুজনকে কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ভারতীয় পুলিশ সূত্র জানায়, তারা দুজন গত ১৫ দিন যাবৎ কলকাতায় চিকিৎসা করতে উঠেছিলেন মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি হোটেলে। নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ফারহানা ইসলাম ঢাকায় সিটি ব্যাংকে ও মঈনুল ইসলাম ঢাকায় গ্রামীণফোনে চাকরি করতেন। গত ১৫ দিন আগে তারা ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গিয়েছিল। ভারতে তাদের সাথে যাওয়া কাজি সাফি রহমত উল্লাহ জানান, আমরা তিনজনই দাঁড়িয়ে ছিলাম শেক্সপিয়র সরণিতে। এমন সময় আকস্মিক জাগুয়ার জিপ সজোরে পাশের রাস্তায় উঠে পড়ে ফারহানা ও মঈনুলকে চাপা দেয়। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহত ফারহানার লাশ বেনাপোল চেকপোস্টে গ্রহণ করেন তার চাচাতো ভাই আবু ওবাইদা সাফিন আর মঈনুল আলমের লাশ গ্রহণ করেন তার চাচাতো ভাই জিয়াদ আলী। বেনাপোল ইমিগ্রেশন পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুম বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভারত থেকে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভাইয়ের এমন মৃত্যু এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না মইনুলের বড় ভাই কাজি মোহাম্মদ সাইফুল আলম। কান্নাভেজা গলায় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ভাবতেই পারছি না এমনটা হয়েছে। পরশু রাতেই কথা হয়েছিল। আমি ঝিনাইদহে আছি। বাবা-মা এখনও কিছুই জানেন না। সাইফুল জানান, তানিয়া তার ভাইয়ের বন্ধু ছিলেন। মইনুলের স্ত্রী এবং ৪ বছরে ছেলে আছে। চিকিৎসার প্রয়োজনে জিয়াদ এবং তানিয়াকে নিয়ে মইনুল গত ১৪ তারিখ ভারতে আসেন। উঠেছিলেন মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি হোটেলে। ১৫ অগস্ট রাতে মইনুলের সঙ্গে শেষ কথা হয় সাইফুলের। তিনি বলেন, কলকাতায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চোখ দেখাতে গিয়েছিল মইনুল। এবারের কলকাতা যাত্রা ছিল রুটিন চেকআপের জন্য। তানিয়া-জিয়াদও ওর সঙ্গে গিয়েছিল। এদিকে ঘাতক জাগুয়ারের চালক কলকাতার বিখ্যাত বিরিয়ানির দোকান আরসালানের মালিকের ছেলে আরসালান পারভেজ। তাকে প্রযুক্তির মাধ্যমে শেক্সপিয়র থানার কলকাতা পুলিশ প্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আরসালান পারভেজকে শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়ে দেয় আদালত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরসালান পারভেজরা দুই ভাই। দুজনেই বিদেশে পড়াশোনা করতে গিয়েছিল। ২০১৪-২০১৮ সাল পর্যন্ত পারভেজ এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস ম্যানেজমেন্টের পড়াশুনো করেছেন।
লক্ষ্মীপুরে নতুন মোটরসাইকেল কেড়ে নিল কলেজছাত্রের প্রাণ পূর্ববর্তী

লক্ষ্মীপুরে নতুন মোটরসাইকেল কেড়ে নিল কলেজছাত্রের প্রাণ

ঝিলপাড় বস্তিতে পুড়েছে ৬০০ ঘর,ক্ষতিগ্রস্ত  তিন হাজার পরিবার পরবর্তী

ঝিলপাড় বস্তিতে পুড়েছে ৬০০ ঘর,ক্ষতিগ্রস্ত তিন হাজার পরিবার

কমেন্ট