ধানক্ষেতে গিয়ে মিশেছে পাকা সড়ক!

ধানক্ষেতে গিয়ে মিশেছে পাকা সড়ক!

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের খাসের হাট রাস্তার মাথা থেকে একটু পূর্বে এগোলেই শেখ আহমদ সড়ক। মূল সড়ক থেকে উত্তর দিকে চলে যাওয়া পাকা সড়কটিতে কৌতূহলবশত ঢুকলেও আধা কিলোমিটার যেতেই থেমে যেতে হয়। কারণ ওখানেই শেষ, সামনে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত! পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখা যায় রাস্তার পাশে মাত্র চারটি বাড়ি। বাকিটা জনশূন্য। স্থানীয়রা জানায়, পাঁচ বছর আগে এ সড়ক ছিল না। সড়কের জায়গায় ধানক্ষেতের মাঝ দিয়ে সরু আইল ছিল। আইলের ওপর কাঁচা সড়ক নির্মাণের পর পরই সড়কটি পাকা করা হয়। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আহমদের নামে সড়কের নামকরণ করা হয়। তবে স্থানীয়রা সড়কটিকে এ নামে চেনে না। রহমান দুবাইওয়ালা (স্থানীয় উচ্চারণ ডুবাইওয়ালা) বাড়ির সামনের সড়ক হিসেবে কেউ কেউ চেনে। স্থানীয়রা বলছে, রাজনৈতিক বা ব্যক্তির প্রভাব খাটিয়ে সড়কটি রাতারাতি তৈরি করা হয়েছে। অথচ পুরনো অনেক সড়ক সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে ভরে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক এখনো কাঁচা। নিয়ম অনুযায়ী কাঁচা সড়ক নির্মাণের অন্তত দুই বছর পর সলিং করতে হয়। এরপর গুরুত্ব বুঝে সেটি পাকা করতে হয়। অথচ শেখ আহমদ সড়ক নির্মাণে সেই নিয়মও মানা হয়নি। শুধু ব্যক্তিস্বার্থে সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে। ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি ২০১০-১১ অর্থবছরে নির্মিত বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সুবর্ণচর উপজেলা কার্যালয়। তবে কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটি নির্মাণ করেছে এবং কত টাকা ব্যয় হয়েছে, এসব তথ্য দিতে পারেননি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। এলজিইডি কার্যালয়ের একাধিক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সড়কটি একজন প্রভাবশালীর বাড়ির বদৌলতে নির্মাণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক চাপ ছিল। যদিও এ সড়কের কোনো গুরুত্ব ছিল না। পাকা তো দূরের কথা, এখানে কাঁচা সড়কও হওয়ার কথা নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও ব্যক্তিস্বার্থের কারণে সড়ক হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে সড়কটিকে সামনে বাড়িয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তারা। জানতে চাইলে সড়কটি গুরুত্বহীন বলে স্বীকার করেন সুবর্ণচর উপজেলা প্রকৌশলী মো. তাসাউর রহমান। তিনি বলেন, তার দায়িত্বকালে এ সড়ক হয়নি। তবে এখানে এ সড়কের দরকার ছিল না। এটি কারোরই কাজে আসেনি। শুধু শুধু সরকারি অর্থের অপচয় হয়েছে। তবে যেহেতু অর্ধেক কাজ হয়ে রয়েছে, সেহেতু আগামী দিনে সড়কটির সামনের অংশ বাড়িয়ে বৈরাগী বাজার সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
কৃষিজীবীদের মধ্যে দারিদ্র্য এখনো বেশি পূর্ববর্তী

কৃষিজীবীদের মধ্যে দারিদ্র্য এখনো বেশি

বীজ কোম্পানির প্রতারণার শিকার শতাধিক ফুলকপি চাষী পরবর্তী

বীজ কোম্পানির প্রতারণার শিকার শতাধিক ফুলকপি চাষী

কমেন্ট