পেনসিলের নরম সিস কীভাবে ঢোকানো হয়?

পেনসিলের নরম সিস কীভাবে ঢোকানো হয়?

পেনসিলের ব্যবহার শুরু হয় সবার ছোটবেলা থেকে। প্রথম অ-আ-ক-খ শুরু হয় এই পেনসিল দিয়েই। পেনসিলের উৎপত্তি ফরাসি শব্দ 'পিনসেল' থেকে। পেনসিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল এর সিস, যা দিয়ে আমরা লিখি বা আঁকি। গ্রাফাইট আর কাদামাটি দিয়ে তৈরি হয় এটি। কিন্তু কীভাবে এই নরম শিস কাঠের ভেতরে ঢোকানো হয়? তবে জেনে নেওয়া যাক পেনসিল তৈরির প্রক্রিয়া : প্রথমে অনেকগুলো গ্রাফাইট খণ্ড আর কাদামাটি নিয়ে সেগুলো একটি বিশালাকৃতির ঘুর্ণয়মান ড্রামে রাখা হয়। ড্রামে থাকে বড় পাথরের টুকরো। যখন ড্রাম ঘোরে তখন পাথরের চাপে গ্রাফাইট-কাদামাটি একেবারে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে হয়ে যায়। এই গুঁড়োয় পানি মিশিয়ে রেখে দেওয়া হয়। কাদার মতো ওই পদার্থকে চার দিনের জন্য রেখে দেওয়া হয়। কিছুটা শুকনো এই নরম মিশ্রণকে পরে ধাতব নলের ভিতরে রেখে পাতলা রডের আকৃতি দেওয়া হয়। সেই রডগুলোকে পেনসিলের সমান আকারে কাটা হয় মেশিনের সাহায্যে। সিসগুলিকে শুকানোর জন্য রাখা হয় কনভেয়ার বেল্টে। এরপর ওভেনে রেখে উত্তপ্ত করা হয়, যাতে সিসগুলো আরও শক্ত হয়। পেনসিলের জন্য মূলত সিডার গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়, এতে সুগন্ধ থাকে। এর আকারও সহজে বিকৃত হয় না। সিডার গাছের কাঠের ব্লক কেটে পাতলা পাতলা অনেকগুলো খণ্ডে ভাগ করা হয় যাকে ইংরেজিতে বলে স্ল্যাট। এগুলো সাধারণ ভাবে ৭.২৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ০.২৫ ইঞ্চি ঘনত্ব ও ২.৭৫ ইঞ্চি প্রস্থের হয়। সংস্থা বিশেষে মাপ আলাদা হতে পারে। স্ল্যাটগুলোকে এরপর কনভেয়ার বেল্টে রাখা হয়। স্ল্যাটগুলিকে মোম ও বিশেষ রং দিয়ে সমান আকার দেওয়া হয়, মসৃণ করা হয়। বেল্টে থাকা অবস্থাতেই স্ল্যাটে অর্ধবৃত্তাকার খাঁজ কাটা হয়। খাঁজগুলোর ঘনত্ব সিসের অর্ধেক। এরপর স্ল্যাটগুলোতে আঠা লাগানো হয় আর খাঁজের ভেতরে সিসগুলো বসিয়ে দেয়া হয়। অন্য দিকে অপর কনভেয়ার বেল্ট আলাদা স্ল্যাট বহন করে। এগুলোর আকার, খাঁজের ধরন সবই পূর্বোক্ত স্ল্যাটগুলোর মতোই। শুধু এগুলোতে আঠা লাগানো হয় না, খাঁজগুলোতে সিসও রাখা থাকে না। এসব স্ল্যাটকে প্রথম স্ল্যাটগুলোর উপর বসিয়ে দেওয়া হয়। অনেকটা স্যান্ডউইচ তৈরির মতো। এসব স্যান্ডউইচকে বেল্ট থেকে তুলে ক্ল্যাম্পের সাহায্যে আটকে রাখা হয়। হাইড্রোলিক প্রেসের সাহায্যে চাপ দেওয়া হয় যাতে বাড়তি আঠা চারপাশ থেকে বেরিয়ে আসে। তখনও স্যান্ডউইচগুলো ক্ল্যাম্পে আটকে রাখা হয় শুকানোর জন্য। এরপর ব্লক কাটে গ্রুভার মেশিন। দ্রুত ঘুর্ণায়মান স্টিল ব্লেডের সাহায্যে এ গুলোকে বৃত্তাকার অথবা ষড়ভূজাকার করে কাটা হয়। একই যন্ত্রের সাহায্যে প্রতিটি স্ল্যাট থেকে ৬-৯টি পর্যন্ত আলাদা আলাদা পেনসিল কেটে নেওয়া হয়। প্রতিটি পেনসিলকে এরপর যন্ত্রের সাহায্যে মসৃণ করা হয়, বার্নিশ করে শুকানো হয়। যতক্ষণ না পেনসিলে কাঙ্ক্ষিত রং ফুটে উঠে ততক্ষণ এ প্রক্রিয়াটি চলতে থাকে। সবশেষে পেনসিলের পেছনে আঠা অথবা ধাতব কাঁটার সাহায্যে ধাতব কেস লাগানো হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পেনসিলের পেছন দিকটা রাবার বসানো হয়। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল একটি পেনসিল।
গরুর মাংস নরম করবেন যেভাবে পূর্ববর্তী

গরুর মাংস নরম করবেন যেভাবে

রাশিফলে জেনে নিন কেমন যাবে আজকের দিন পরবর্তী

রাশিফলে জেনে নিন কেমন যাবে আজকের দিন

কমেন্ট