ফোনে প্রেম, ঢাকায় এনে ধর্ষণ, লাশ গুম কিশোরীর!

ফোনে প্রেম, ঢাকায় এনে ধর্ষণ, লাশ গুম কিশোরীর!

অবশেষে তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা থেকে কিশোরী পারভীন আক্তারের (১৬) নিখোঁজ হওয়ার কারণ জানিয়েছে পুলিশ। তাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ শেষে হত্যা করার কথা বেরিয়ে এসেছে পুলিশের তদন্তে। জানা যায়, নিখোঁজ পারভীনের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে কলমাকান্দা থানা পুলিশ বুধবার রাতে জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির শেখকে (৩৫) ঢাকার রামপুরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি পারভীন নিখোঁজ হওয়ার কারণ পুলিশের সামনে খুলে বলেন। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া দুর্গাপুর উপজেলার চারিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জানান, কলমাকান্দা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের ওয়াহেদ আলীর মেয়ে পারভীন আক্তারের সঙ্গে গত জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ভুল নম্বরে ফোন কলের মাধ্যমে পরিচয় হয় তাঁর। তারপর ফোনের মাধ্যমেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারভীন আক্তারকে বিয়ের কথা বলে গত জুন মাসের প্রথম দিকে জহিরুল তাকে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে একটি বাসায় রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন। পারভীন বিয়ের জন্য চাপ দিলে জহিরুল নানা টালবাহানায় এড়িয়ে যেতে থাকে। একপর্যায়ে পারভীন জহিরুলের আগের বিয়ে এবং তাদের সংসারে একটি সন্তানের বিষয়টি জানতে পারে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ড শুরু হয়। পুলিশ জানায়, জহিরুল রোজা ঈদের তিনদিন পর আগের স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পারভীনকে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন এবং তাকে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। পরে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর পারভীনের ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ করে দেন। হত্যার পর তাদের গ্রামের সামনে একটি নিচু জমিতে লাশ পুঁতে রাখেন। এর পরের দিনই জহিরুল আবার ঢাকায় চলে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পারভীনকে কোথাও না পেয়ে তার বাবা ওয়াহেদ গত ৩০ জুলাই কলমাকান্দা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশের তদন্তে আরো বেরিয়ে আসে, চার-পাঁচদিন আগে জহিরুল পারভীনের বন্ধ ফোনটি চালু করলে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁর অবস্থান শনাক্ত করে এবং গত বুধবার রাতে ঢাকার রামরপুরা থেকে ফোনসহ জহিরুলকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার কলমাকান্দা থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদে জহিরুল লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেন। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের চারিগাঁও থেকে মাটি খুঁড়ে ওই কিশোরীর ব্যবহৃত পোশাক ও মাথার চুল উদ্ধার করে। কিন্তু দেহাবশেষ এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশের ধারণা মাটি খুঁড়ে ওই কিশোরীর লাশটি শিয়াল-কুকুরে খেয়ে ফেলেছে। কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল করিম বলেন, এ ব্যাপারে নিহতের বাবা ওয়াহেদ বাদী হয়ে শুক্রবার দুপুরে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামি জহিরুল শুক্রবার নেত্রকোনার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দিয়েছেন।
একা ঘরে প্রতিবন্ধী তরুণী খুন পূর্ববর্তী

একা ঘরে প্রতিবন্ধী তরুণী খুন

‘খালি বাসায় সৎবাবার কাছে নিরাপদ ছিল না শিশুটি’ পরবর্তী

‘খালি বাসায় সৎবাবার কাছে নিরাপদ ছিল না শিশুটি’

কমেন্ট