বিদ্যুৎ, রেল সংযোগে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায়

বিদ্যুৎ, রেল সংযোগে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায়

ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ ও রেল যেগাযোগের যৌথ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারা প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নে সমর্থনের জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানান। নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ও দর্শনের প্রশংসা করে বলেছেন, তিনি নিশ্চিত, শেখ হাসিনা সফল হবেন। ‘আমি মেগাওয়াটকে গিগাওয়াটে রূপান্তর করতে চাই’ উল্লেখ করে মোদি বাংলায় বলেন, ‘আজ থেকে আমরা আরো কাছে এলাম। আমাদের সম্পর্ক আরো গভীর হলো।’ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ ভারত সফরে তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল যে ভারত সরকার রাজি থাকলে পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশকে আরো এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে পারে। মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশ ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকি। আমরা ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকে। সুতরাং দুই দেশের সম্পর্ক আরো বাড়ুক, আরো এগিয়ে যাক।’ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বিদ্যুৎ ও রেল খাতে সহযোগিতার এ দিনকে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের জন্য ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত প্রায় সব ক্ষেত্রেই সহযোগিতা করছে। সেগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা সবচেয়ে দৃশ্যমান। ভিডিও কনফারেন্সে ভারতের ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘অষ্টলক্ষ্মী’ হিসেবে গড়ার যে পরিকল্পনা নরেন্দ্র মোদি করছেন তা এই প্রকল্পের মাধ্যমে আরো গতি পাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত যে সহযোগিতা করেছিল বাংলাদেশ সব সময় তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন খাতে অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে আরো তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার উদ্যোগ বাংলাদেশ নিয়েছে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা গত সাড়ে ৯ বছরে তিন হাজার ২০০ মেগাওয়াট থেকে ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশকে আরো এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়ার যে পরিকল্পনা করছে তাতে নরেন্দ্র মোদির সরকার সম্মতি দেবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে তিনি আশা করেন। শেখ হাসিনা ভারতের অর্থায়নের আওতায় শিগগিরই ঢাকা ও টঙ্গীর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়াল গেজ রেললাইন এবং টঙ্গী ও জয়দেবপুরের মধ্যে ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিবেশীর মতোই হওয়া উচিত। মন চাইলেই কথা হবে। ইচ্ছা হলেই সফরে চলে আসবে। এখানে প্রটোকলের বিধিনিষেধ চাই না।’ মোদি বলেন, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরের সময় তাঁর ৫০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হয়েছিল। এখন পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংযোগ প্রকল্প সম্পন্ন হলে ১ দশমিক ১৬ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারত থেকে বাংলাদেশে যাবে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ও দর্শনের প্রশংসা করেন মোদি। ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরকারের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে নয়াদিল্লিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ছিলেন ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। মোদির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেন। এরপর তিনি যুক্ত হন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সঙ্গে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বক্তা ড. আনিসুজ্জামান পূর্ববর্তী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বক্তা ড. আনিসুজ্জামান

সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ পরবর্তী

সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ

কমেন্ট