মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণ এখন অচলাবস্থায়:জাতিসংঘের তদন্তকারী

মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণ এখন অচলাবস্থায়:জাতিসংঘের তদন্তকারী

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের তথ্য অনুসন্ধানী(ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) মিশনের প্রধান বলেছেন, মিয়ানমারের গণতন্ত্রে উত্তরণে অচলাবস্থা চলছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ সমালোচনাকারীকে দমন করছে আর বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছাড়ানো হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পেশকালে মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসমান এ কথা বলেন। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি ৪৪০ পৃষ্ঠার। এই প্রতিবেদনের সারাংশ গত আগস্টের শেষদিকে প্রকাশ করা হয়। তাতে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর পরিচালিত অভিযানকে গণহত্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ দিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১৫ মাসের তদন্ত শেষে তিন সদস্যের এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে রাখাইনসহ মিয়ানমারের তিনটি রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ভয়ঙ্কর সব বিবরণ উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ থেকেই রাখাইনের অভিযানে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করাসহ জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। ইন্দোনেশিয়ার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মারজুকি দারুসমান এই মিশনের নেতৃত্ব দেন। অপর দুই সদস্য হলেন— শ্রীলঙ্কার আইনজীবী নারী অধিকার বিশেষজ্ঞ রাধিকা কুমারস্বামী এবং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক মানবাধিকার কমিশনার ও দেশটির আইন সংস্কার কমিশনের সাবেক সদস্য ক্রিস্টোফার ডমিনিক সিডোটি। মারজুকি দারুসমান বলেন, সেনাবাহিনী যতদিন আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে, ততদিন শান্তি ফেরানো সম্ভব হবে না। মিয়ানমারের উন্নয়ন এবং একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠার পথে দেশটির সেনাবাহিনীই সবচেয়ে বড় বাধা। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ চাইলে সেনাপ্রধান থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়ে এই বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে হবে। বাহিনীর ওপর বেসামরিক প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশে আশ্রয় নেওয়া ৮৭৫ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাতকার নিয়ে, নথিপত্র, ভিডিও, ছবি এবং স্যাটেলাইট ইমেজ পর্যালোচনা করে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। তবে এ দিকে এ প্রতিবেদনকে একপেশে বলে প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিথ্যা অভিযোগ তৈরি করছে। প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জাতি রোহিঙ্গারা। যারা দীর্ঘকাল ধরে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত ও পদ্ধতিগত নির্যাতনের শিকার। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ব্যাপক মাত্রায় নিধন অভিযান শুরু করলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী পুরুষ নিহত হয়। জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।
ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধে দুর্ভিক্ষের কবলে অর্ধকোটি শিশু পূর্ববর্তী

ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধে দুর্ভিক্ষের কবলে অর্ধকোটি শিশু

মার্কিন পণ্যে ৬০০০ কোটি ডলারের শুল্কারোপ চীনের পরবর্তী

মার্কিন পণ্যে ৬০০০ কোটি ডলারের শুল্কারোপ চীনের

কমেন্ট