যে ৫ বিক্ষোভকারী বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের প্রতীক

যে ৫ বিক্ষোভকারী বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের প্রতীক

বিশ্বজুড়ে গণবিক্ষোভের বছর ছিল ২০১৯ সাল। হংকং থেকে শুরু করে চিলি, ইরান, ইরাক থেকে লেবানন, কাতালোনিয়া থেকে বলিভিয়া, ইকুয়েডর থেকে কলম্বিয়া- লাখ লাখ মানুষ প্রতিবাদ জানাতে ও বিক্ষোভে অংশ নিতে রাস্তায় নেমেছেন নানা দেশে। বিক্ষোভের ধরন– দাবি ও কারণ ভিন্ন হলেও প্রতিবাদের ভাষা ছিল একই। বৈষম্য, অবিচার, রাজনৈতিক ভিন্নমত- এ রকম নানা কিছু। খবর বিবিসির। কিন্তু হাজার হাজার মাইল দূরের এসব দেশের বিক্ষোভকারীরা একে অন্যকে অনুপ্রাণিত করেছেন। কীভাবে বিক্ষোভ করতে হয়, তার নানা আইডিয়া তারা আদান-প্রদান করেছেন। এসব বিক্ষোভে অনেক ক্ষেত্রেই কোনো নেতা ছিলেন না। কিছু কিছু বিক্ষোভকারী তাদের দেশে বিক্ষোভের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। কোনো কোনো বিক্ষোভকারী তো পরিচিতি পেয়ে গেছেন গোটা বিশ্বে। কারা এই বিক্ষোভকারী? কীভাবে তারা বিক্ষোভের প্রতীকে পরিণত হলেন? চিলির ড্যানিয়েলা কারাসকো, লা মিমো: ড্যানিয়েলা কারাসকো পরিচিত 'লা মিমো' বা দ্য মাইম নামে। ৩৬ বছর বয়সী এ শিল্পী চিলির গণবিক্ষোভে অংশ নেন। তাকে চিলির পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে ২০ অক্টেবর তার প্রাণহীন দেহ খুঁজে পাওয়া যায় একটি পার্কের প্রাচীরে ঝুলন্ত অবস্থায়। চিলিতে বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এবং এটি করা হয়েছে অন্য নারীদের ভয় দেখাতে, যাতে তারা বিক্ষোভে অংশ না নেয়। ইরাকের সাফা আল সারে: ইরাকের সাফা আল সারে ছিলেন ২৬ বছর বয়সী একজন গ্র্যাজুয়েট প্রকৌশলী। তিনি ছিলেন একই সঙ্গে একজন কবি ও রাজনৈতিককর্মী। ইরাকে রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকারের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সোচ্চার ছিলেন। ইরাকে তরুণদের বেকারত্বের সমস্যা নিয়ে তিনি ব্লগিং করতেন। গত অক্টোবরে যখন তিনি এক সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছিলেন, তখন একটি টিয়ার গ্যাসের ক্যানিস্টার এসে আঘাত করে তার মাথায়। কয়েক দিন পর তিনি মারা যান। হংকংয়ের স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যকর্মী: ১১ আগস্ট হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় সিম শা সুই নামের এক তরুণী তার একটি চোখ হারিয়েছিলেন। পুলিশ তার মুখ লক্ষ্য করে 'বিন ব্যাগ পেলেট' ছুড়লে সেফটি গগলস ভেদ করে তা মেয়েটির চোখে আঘাত করে। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ার পর দেখা যায়, মেয়েটি মাটিতে পড়ে আছে, তার ডান চোখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সিম শা সুই আন্দোলনের অন্যতম প্রতীকে পরিণত হন। কলম্বিয়ার ডিলান ক্রুজ: ডিলান ক্রুজ ছিলেন ১৮ বছর বয়সী এক কলম্বিয়ান ছাত্র। গত নভেম্বরে পুলিশ তার মাথা লক্ষ্য করে কিছু একটা ছুড়েছিল। হাইস্কুল থেকে পাস করে বেরোনোর মাত্র কয়েক দিন আগে ডিলান ক্রুজ মারা যান। ডিলান ক্রুজ ব্যবসায় প্রশাসন নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছিলেন। কিন্তু এ জন্য তার একটা শিক্ষাবৃত্তির দরকার ছিল। রাজধানী বোগোটায় তিনি এক বিক্ষোভে যোগ দেন। তার মতো ছাত্ররা যেসব সমস্যায় ভুগছেন, সেগুলো তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। তার মৃত্যু ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করে। লেবাননের আলা আবু ফাখের: লেবাননের প্রগ্রেসিভ সোশ্যালিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আলা আবু ফাখের। রাজধানীর বৈরুতের স্থানীয় সরকারে কাজ করতেন তিনি। ১২ নভেম্বর লেবাননের সরকারি সৈন্যরা তাকে গুলি করে। তিনি সরকারবিরোধী ও দুর্নীতিবিরোধী এক মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। তার আগে আরও একজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। কিন্তু আলা আবু ফাখের যেভাবে মারা যান, তা ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করে। একটি রাস্তা অবরোধ করা লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে সরাসরি গুলি চালিয়েছিলেন সেনারা। তার ওপর গুলির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। বিক্ষোভকারীরা তাকে আন্দোলনের 'প্রথম শহীদ' বলে বর্ণনা করেন।
রক্তে যদি ইউরিক এসিড বেড়ে যায় পূর্ববর্তী

রক্তে যদি ইউরিক এসিড বেড়ে যায়

যেসব দেশে বিমান চলাচল বিপজ্জনক পরবর্তী

যেসব দেশে বিমান চলাচল বিপজ্জনক

কমেন্ট