রোবটের কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে

রোবটের কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে

রোবট, অ্যালগরিদম কিংবা প্রযুক্তির মাধ্যমে হিসাবরক্ষণ পদ্ধতির বিকাশের ফলে এত দিন মনে করা হচ্ছিল যে এতে করে মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। সারা বিশ্বে বিপুলসংখ্যক মানুষ হয়ে পড়বে কর্মহীন! কিন্তু তেমন উদ্বেগের কারণ নেই বলে সম্প্রতি বৈশ্বিক অর্থনীতি বিষয়ে কাজ করা সুইজারল্যান্ডভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) জানিয়েছে। ডব্লিউইএফের মতে, রোবট বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিকাশের ফলে মানুষের কর্মসংস্থানের যতখানি জায়গা দখল হয়ে যাবে, কাজের ক্ষেত্র তৈরি হবে তার চেয়ে দ্বিগুণ। ডব্লিউইএফ জানায়, দ্রুত বর্ধনশীল প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে আগামী এক দশকের মধ্যে মানুষের জন্য সারা বিশ্বে প্রায় ১৩ কোটি ৩০ লাখ চাকরির বাজার সৃষ্টি হবে। আর এই সময়ে প্রযুক্তির বিকাশের ফলে চাকরি হারাবে সাত কোটি ৫০ লাখ মানুষ। বিকাশমান রোবট-অর্থনীতির ফলে লাখ লাখ লোক চাকরি হারাবে ও জীবনযাত্রার মানে বৈষম্য তৈরি হবে—এ রকম উদ্বেগ কমাতে ডব্লিউইএফের এ তথ্য কাজে আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ডব্লিউইএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনীতির ইতিহাসে দেখা যায়, শিল্পবিপ্লবের ফলে অনেক মানুষ চাকরি হারিয়েছিল। কিন্তু একই সঙ্গে সে সময় বিদ্যুৎ এবং বাষ্পীয় ইঞ্জিনের ব্যবহার মানুষের জন্য নতুন অনেক কাজের ক্ষেত্র তৈরি করেছিল, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছিল মধ্যবিত্ত সমাজ; রোবট-অর্থনীতির ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটবে। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের ডাভোস শহরে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী নেতা, রাজনীতিবিদরা অংশ নেন। সম্মেলনের আয়োজকরা ২০ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের ওপর জরিপ চালান। এসব প্রতিষ্ঠানে এক কোটি ৫০ লাখ মানুষ কর্মরত। সেই জরিপ থেকে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম কর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যাপারে তথ্য পায়। তবে সংস্থাটি ব্যবসা স্বয়ংক্রিয় করার (অটোমেশন) ব্যাপারে সতর্কও করে দেয়। ডব্লিউইএফের চেয়ারম্যান ক্লস সোয়াব বলেন, প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, তা আগে থেকেই জানা যায় তেমন নয়। নতুন এ পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে মানুষকে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করতে অনেক বড় বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ ছাড়া প্রতিবেদনে জরুরি যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে তা হলো, নতুন পরিস্থিতিতে চাকরি নিয়ে হুমকির মধ্যে থাকা কর্মজীবীদের পুনরায় দক্ষ করে তোলা এবং তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বৈঠকে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা জানান, ২০২৫ সালের মধ্যেই তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্ধেকের বেশি কাজ হবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। অ্যাকাউন্টিং, ডাটা এন্ট্রি, হিসাবনিকাশ এসব কাজের ক্ষেত্রে মানুষের প্রয়োজন হবে না। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সামাজিক সংগঠন ফেবিয়ান সোসাইটি ও ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী দেশটিতে ৬০ লাখের বেশি মানুষ আগামী দশকের মধ্যেই তাঁদের কাজ প্রযুক্তি দখল করে নেবে বলে আশঙ্কা করছেন। যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক অব ইংল্যান্ড’ আগেই সতর্ক করেছে, এক কোটি ৫০ লাখ পর্যন্ত মানুষের চাকরি আগামীতে হুমকির মুখে পড়তে পারে।
অকালে বলিরেখার কারণ পূর্ববর্তী

অকালে বলিরেখার কারণ

মাথায় আঘাত পেলে করণীয় পরবর্তী

মাথায় আঘাত পেলে করণীয়

কমেন্ট