লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত

লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি মাতা লাকা ওয়ালমুলক, লা শারিকা লাক... ( ‘আমি হাজির। ও আল্লাহ! আমি হাজির। তোমার কোন শরিক নেই। সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধুই তোমার। সাম্রাজ্য তোমার। তোমার কোন শরিক নেই’) ধ্বনিতে মুখর এখন পবিত্র আরাফাতের ময়দান। আজ সোমবার ফজরের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রায় ২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন। এরমধ্য দিয়ে শুরু হলো বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মিলন পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সৌদি আরব সময় দুপুর ১২টার পর আরাফাতের ময়দানের মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা পাঠ করবেন মদিনা মসজিদে নববির ইমাম ও খতিব, মদিনা সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি শায়খ ড. হোসাইন বিন আব্দুল আজিজ আল শাইখ। খুতবার পর হাজিরা একসঙ্গে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন। এরপর তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে আরাফাত থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় যাবেন এবং সেখানে একসঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। রাতে সেখানে তারা অবস্থান করবেন খোলা মাঠে। সেখান থেকে শয়তানের প্রতিকৃতিতে নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ মুজদালিফায় মুসল্লিরা ফজরের নামাজ আদায় করে কেউ ট্রেনে, কেউ গাড়িতে, কেউ হেঁটে মিনায় যাবেন এবং নিজ নিজ তাঁবুতে ফিরবেন। মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজিরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (প্রতীকি) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। হাজিরা মক্কায় ফিরে কাবা শরীফ তাওয়াফ ও সাঈ (কাবার চারদিকে সাতবার ঘোরা ও সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌঁড়ানো) করে আবার মিনায় ফিরে যাবেন। জিলহজ্বের ১১ তারিখ মিনায় রাত যাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের উপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। পরদিন ১২ জিলহজ্ব মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের উপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান। মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবা শরীফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ী তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ী তাওয়াফ অর্থাত্ কাবা শরিফে পুনরায় সাতবার চক্কর দেয়ার মাধ্যমে হাজিরা পবিত্র হজ্বব্রত পালন সম্পন্ন করবেন । বাংলাদেশ হজ মিশনের তথ্যানুযায়ী, এ বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৭ হজযাত্রী (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বিমান বাংলাদশে এয়ারলাইনস হজযাত্রী পরিবহন শেষ করেছে ১৫ আগস্ট। আর সৌদি এয়ারলাইনস ১৭ আগস্ট হজযাত্রী পরিবহনের কাজ শেষ করেছে । এদিকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার পূর্বে শনিবার পর্যন্ত বার্ধক্য, হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ৫১ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪২ জন পুরুষ ও নয় নারী রয়েছে। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে হজ পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সৌদি সরকার। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাজিদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য মক্কায় পর্যাপ্ত জনবল, ওষুধ ও যন্ত্রপাতিসহ কয়েকটি হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মিনা,আরফাতের ময়দান ও মুজদালিফায় অনেকগুলো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের সাহায্য করার জন্য একটি বিশেষ সেল স্থাপন করেছে।
সৌদি আরবে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা পূর্ববর্তী

সৌদি আরবে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা

ইমরানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ায় সিধুর ফাঁসির দাবি! পরবর্তী

ইমরানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ায় সিধুর ফাঁসির দাবি!

কমেন্ট