শেষ রক্ষা হলো না...

শেষ রক্ষা হলো না...

দুই ভাইয়ের মূল পেশা ছিল জুয়া আর নেশা ছিল বাড়ি কেনা। জুয়ার টাকায় তাঁরা কেনেন ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক পদও। টাকা ঢেলে এনু ২০১৮ সালে গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদ পান। সেই সঙ্গে পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ স্বজন-ঘনিষ্ঠজনদের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগে ১৭টি পদ পাইয়ে দেন তাঁরা। এসব পদ-পদবির জোরে নির্বিঘ্নে চলছিল তাঁদের ক্যাসিনো কারবার। এনু ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের শেয়ারহোল্ডার। তিনি গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তাঁর ভাই রূপন ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। কয়েক মাস আগে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগ নেতা দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়া জাল পাসপোর্ট তৈরি করে মিয়ানমারে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাদের বিপুল সম্পদের সন্ধান মেলে। পালানোর চেষ্টা করেন তারা। তাঁরা জাল পাসপোর্ট তৈরি করে মিয়ানমারে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল না হয়ে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কাছে একটি ভবনে দীর্ঘদিন অবস্থান করেন এবং পরে ঢাকায় ফিরে আসেন। এরপর নেপালে যাওয়ার চেষ্টা চালান। তাতেও ব্যর্থ হন। কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে গ্রেপ্তার এড়াতে তাঁরা প্রভাবশালীদের দ্বারে ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল সোমবার সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তারের পর দুই ভাইয়ের কাছ থেকে ৪৪ লাখ টাকা ও ১২টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের জমিসহ ২২টি বাড়ি ও ফ্ল্যাট, ৯১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং এসব অ্যাকাউন্টে ১৯ কোটি টাকা থাকার তথ্য পেয়েছে সিআইডি। সিআইডি সূত্র জানায়, গত সাত বছরে এই দুই ভাই বাড়ি কিনেছেন ১২টি। ফ্ল্যাট কিনেছেন ছয়টি। পুরনো বাড়িসহ নতুন নতুন কেনা জমিতে গড়ে তুলেছেন ইমারত। দুই ভাইয়ের মূল পেশা ছিল জুয়া আর নেশা ছিল বাড়ি কেনা। জুয়ার টাকায় তাঁরা কেনেন ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক পদও। টাকা ঢেলে এনু ২০১৮ সালে গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদ পান। সেই সঙ্গে পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ স্বজন-ঘনিষ্ঠজনদের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগে ১৭টি পদ পাইয়ে দেন তাঁরা। এসব পদ-পদবির জোরে নির্বিঘ্নে চলছিল তাঁদের ক্যাসিনো কারবার। সিআইডি জানায়, অবৈধ টাকায় তাঁরা স্বর্ণালংকার কিনে বাসার সিন্ধুকসহ স্বজনদের কাছেও গচ্ছিত রাখতেন। গত সেপ্টেম্বরে বাড়িতে চালানো অভিযানে র‌্যাব তাঁদের মালিকানার পাঁচ কোটি টাকা ও ৭২০ ভরি স্বর্ণালংকার জব্দ করেছিল। সিআইডি সূত্র জানায়, গতকাল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই ভাই জানিয়েছেন, দেশ থেকে পালানোর জন্য তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে বহু কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে ধরনা দিয়েছেন ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালীদের কাছে। জাল পাসপোর্ট তৈরি করেছেন। সীমান্তে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছেন। গতকাল ধরা পড়ার পরও তাঁরা সিআইডিকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা জানায়, দয়াগঞ্জের আওয়ামী লীগ অফিসে মাঝে মাঝে বিকেলের দিকে আসতেন এনু ও রূপন। তাঁদের সঙ্গে ২০-২৫ জন থাকত। তাদের অনেকের কাছে থাকত আগ্নেয়াস্ত্র। এলাকার পুরনো নেতাদের তাঁরা সম্মান করার দরকারই মনে করতেন না।
মাল্টিপারপাস কোম্পানির অফিস থেকে ৮ কোটি টাকা জব্দ পূর্ববর্তী

মাল্টিপারপাস কোম্পানির অফিস থেকে ৮ কোটি টাকা জব্দ

মানবতাবিরোধী অপরাধে কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল পরবর্তী

মানবতাবিরোধী অপরাধে কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল

কমেন্ট