শ্রীমঙ্গলে কিশোরীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় আদালতে ৩ আসামির স্বীকারোক্তি
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক কিশোরী গৃহকর্মীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মৌলভীবাজার আদালতে রোববার এ ঘটনায় আটককৃত চার আসামি ধর্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার কথা স্বীকার করেছে।
তবে কিশোরীর কথিত প্রেমিক রিকশাচালক কিশোর ইয়াকুব মিয়া জবানবন্দি দিলেও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেনি।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় শহরের বধ্যভূমিসংলগ্ন ভুরভুরিয়া চা বাগানের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ টমটমচালক, প্রেমিক ইয়াকুব মিয়া ও দুজন চা বাগান শ্রমিককে আটক করে।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হলেন- উপজেলার ভুরভুরিয়া চা বাগানের নারায়ণ মালের ছেলে হরিমন মাল (৩৫), একই এলাকার সিতারাম মৃধার ছেলে মিন্টু মৃধা (২৯), সিন্দুর খান এলাকার মৃত ময়না মিয়ার ছেলে টমটমচালক কবির মিয়া (৩২) ও ক্যাথলিক মিশন রোডের আঞ্জব আলীর ছেলে ইয়াকুব মিয়া (১৬)।
জানা যায়, শহরের রূপসপুর চিড়িয়াখানা সড়কে সুরোজ মিয়ার বাসায় মেয়ের মা বিধবা হোসনে আরা বেগম বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।
শ্রীমঙ্গলে মানুষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে সংসার চালান। তার মেয়ে শহরের মিশন রোডের শাহ আলম পাটোয়ারীর মেয়ের বাসা দিনাজপুরে গৃহকর্মীর কাজ করে।
দুই সপ্তাহ আগে মেয়েটি শ্রীমঙ্গলে মায়ের কাছে বেড়াতে এসেছিল। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মেয়েটিকে শাহ আলম পাটোয়ারীর বাসা থেকে পূর্ব পরিচিত প্রতিবেশী রিকশাচালক কিশোর ইয়াকুব মিয়া শহরের বধ্যভূমিতে ঘুরতে নিয়ে যায়।
প্রেমিক ইয়াকুব মিয়ার উদ্দেশ্য ছিল রাতের ট্রেনে কিশোরীকে নিয়ে ঢাকা পাড়ি জমানোর। এ সময় বধ্যভূমির পাশে ভুরভুরিয়া চা বাগানের রাস্তায় তারা যখন ঘোরাঘুরি করছিল, তখন একটি টমটমচালক তাদের দেখে গাড়ি থামায়।
টমটমচালক তখন তাদের সঙ্গে ভাব জমায় এবং তাদের নিয়ে বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন বধ্যভূমির দিকে নিয়ে যায়।
সেখানে গিয়ে টমটমচালক ভুরভুরিয়া চা বাগানের দুই পাহারাদারকে ফোন দেয়। বাগানের পাহারাদাররা এসে প্রেমিক ইয়াকুবকে টমটমে বেঁধে রেখে কিশোরীকে বাগানের ভেতরে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
তবে এক চা শ্রমিক তার জবানবন্দিতে ইয়াকুব মিয়াও ধর্ষণ করেছে বলে জানায়। পরে টমটমচালক কবির মিয়া তাদের চা বাগান থেকে শহরে এনে ছেড়ে দেয়।
মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ এবং অভিযান চালিয়ে কথিত প্রেমিক, দুই চা শ্রমিক ও টমটমচালককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে মেয়ের মা হোসনে আরা বেগম যুগান্তরকে বলেন, ইয়াকুব মিয়া তাদের পূর্ব পরিচিত। সে আমার মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তিনি মেয়ের ধর্ষণকারী সবার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
কমেন্ট