সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত কর প্রস্তাব প্রত্যাহার হতে পারে

সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত কর প্রস্তাব প্রত্যাহার হতে পারে

জাতীয় সংসদে সদ্য ঘোষিত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর বর্ধিত কর প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে পারে সরকার। এ বিষয়ে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাশের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্ধিত কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, ক্ষুদ্র আয়ের জনগণ তাদের সারা জীবনের আয় বিশেষ করে অবসরে যাওয়া চাকরিজীবীরা ভবিষ্যৎ জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাদের পেনশনের টাকার বড় একটি অংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে থাকেন। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয় পত্রের ওপর যে কর বাড়ানো হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে এইসব ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। এতে বর্তমান জনবান্ধব সরকারের জনপ্রিয়তা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এই অবস্থা বিবেচনায় নতুন বাজেটে সঞ্চয়পত্রের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের প্রস্তাব বিবেচনা করার চিন্তা করছে সরকার। বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর রয়েছে পাঁচ শতাংশ। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বর্ধিত কর আরোপের প্রস্তাবের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই এ নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে,সমাজের মধ্যবিত্ত, অবসরভোগী ও ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের আয়ের ওপর সরাসরি আঘাত করবে এই বর্ধিত কর। এমনকি সংসদে সরকার দলীয় সংসদ সদস্যসহ অন্যরা বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। এরপর থেকেই সঞ্চপত্রের ওপর থেকে বর্ধিত কর আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহারের চিন্তা করা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্রের ওপর যে কর বাড়ানো হয়েছে তা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় চিন্তা করা হচ্ছে। প্রথমত: দেশে প্রচলিত সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর থেকে বর্ধিত কর প্রত্যাহার করা হবে। অথবা শুধু পরিবারভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ওপর আরোপিত বর্ধিত হারের কর প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হবে। বিষয়টি নিয়ে খুব শিগগির প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ চাওয়া হবে। তার সিগন্যাল পেলেই সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এটি নিশ্চিত যে সঞ্চয়পত্রের ওপর প্রস্তাবিত বর্ধিত কর বিবেচনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা না প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর বর্ধিত কর প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এটা নিশ্চিত তবে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের ওপর তা প্রত্যাহার করা হবে, না শুধু পারিবারিক ও পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ওপর প্রত্যাহার করা হবে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি জানতে হলে সংসদে যেদিন অর্থবিল পাস হবে সে দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সে দিন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং তা প্রত্যাহারের জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে পারেন। এখানে উল্লেখ্য, পারিবারিক সঞ্চয়পত্র শুধু নারীরা ক্রয় করতে পারেন। আর পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন অবসরভোগী চাকরিজীবীরা। সঞয়পত্র নীতি অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারী একজন পাঁচ শতাংশ কর কর্তনের মুনাফা হিসেবে পাচ্ছেন ৯৫ টাকা। কিন্তু আগামী অর্থবছরে ১০ শতাংশ কর কর্তনের পর মুনাফা হিসেবে পাবেন ৯০ টাকা। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত একজন অবসরভোগী পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সর্বাধিক ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ বা ক্রয় করতে পারেন। বিদ্যমান নীতি অনুযায়ী পাঁচ শতাংশ কর কর্তনের পর ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগের ওপর বার্ষিক মুনাফা পান ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা। উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ কর্তন করা হলে তার মুনাফা ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে কমে হবে ৫ লাখ ২৯ হাজার ২০০ টাকা। এতে অবসরভোগী ব্যক্তি বার্ষিক ২৯ হাজার ৪০০ টাকা কম মুনাফা পাবেন।
গ্যাসের দাম আবারও বাড়ানোর ঘোষণা পূর্ববর্তী

গ্যাসের দাম আবারও বাড়ানোর ঘোষণা

নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা 'লিব্রা' আনছে ফেসবুক পরবর্তী

নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা 'লিব্রা' আনছে ফেসবুক

কমেন্ট