থাইল্যান্ডের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি সই
সমাজবিজ্ঞান প্রথম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্ন
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মাহমুদ সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা। একদিন একটি প্রভাবশালী মহল তাদের একটি কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য মাহমুদ সাহেবকে ঘুষ দিতে চায়। কিন্তু মাহমুদ সাহেব তাদের ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং তিনি তাদের বোঝান, যোগ্যতা থাকলে কাজ পেতে ঘুষ দেওয়া লাগে না।
ক) Agesion শব্দের অর্থ কী?
খ) পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজ বলতে কী বোঝায়?
গ) উদ্দীপকে মাহমুদ সাহেবের মধ্যে যে গুণটির উপস্থিতি লক্ষ করা যায় তার স্বরূপ ব্যাখ্যা করো।
ঘ) ‘সমাজজীবনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে মাহমুদ সাহেবের মতো লোকের সমাজে দরকার’—তুমি কি একমত? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
উত্তর :
ক) Agesion শব্দের অর্থ হলো বয়স বৈষম্যবাদ।
খ) সন্তানের লালন-পালন পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজের মধ্যে পড়ে।
শিশুর গোসল করানো, খাওয়ানো, পরিচর্যা, আদর-যত্ন সর্বোপরি তাকে স্নেহের পরশে লালন-পালনের কাজটি মূলত মনস্তাত্ত্বিক। এসব কাজ শিশুর প্রতি স্নেহ, আদর, ভালোবাসা ও আবেগের কারণেই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। আধুনিক সমাজ-মনোবিজ্ঞানীরা শিশুর ব্যক্তিত্ব গঠনে পারিবারিক অভিজ্ঞতার ওপর গুরুত্ব দেন। আর এসবই হচ্ছে পরিবারের মনস্তাত্ত্বিক কাজ।
গ) মাহমুদ সাহেবের মধ্যে নৈতিকতার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
নৈতিকতা হলো মানুষের অন্তর্নিহিত সূক্ষ্ম অনুভূতি। Morality of Ethics-কে ইংরেজিতে নৈতিকতা বলে। নৈতিক শব্দটি ভালো, ন্যায়, সদগুণ ইত্যাদি জাতীয় নৈতিক প্রক্রিয়াকে বুঝায়। আর ‘নৈতিক’ শব্দটির বিপরীত শব্দ ‘অনৈতিক’ অর্থাৎ যা কিছু মন্দ, অন্যায় ইত্যাদি। শান্তিময় জীবনযাপনের ক্ষেত্রে নৈতিকতার প্রত্যাশা অত্যন্ত প্রবল। নৈতিকতা বিষয়টি আপেক্ষিক হলেও সর্বজনীনভাবে গ্রহণীয়। অন্যায়-অবিচার না করার নামই নৈতিকতা। কাজেই অর্থগতভাবে বলা যায়, নৈতিকতা হলো ব্যক্তির যথার্থ নীতিবোধ-সংবলিত সদাচরণ, যা কথা ও কাজে প্রকাশ পায়। অর্থাৎ এই জগৎ-সংসারে ব্যক্তির নীতিবোধ ও আচরণ যথার্থ অনুশীলন এবং কর্মজগতে যেসব আচরণের প্রতিফলন ঘটে তাদের সমন্বিত রূপই নৈতিকতা।
উদ্দীপকের মাহমুদ সাহেবের ঘুষ না নেওয়ার ইচ্ছা তার সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার প্রতীক। শুধু মুখে নয়, কাজেও তিনি সেটা প্রমাণ করেছেন। তাই উপরোক্ত আলোচনায় আমরা নৈতিকতার ধারণা স্পষ্ট দেখতে পাই।
ঘ) সমাজজীবনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে উদ্দীপক দ্বারা ইঙ্গিতকৃত বিষয় তথা নৈতিকতার বিকল্প নেই, আমি এই বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত।
মূলত সামাজিক কল্যাণার্থেই নৈতিকতার উদ্ভব ঘটে থাকে। নৈতিকতা সর্বদা ভালো কিছুর সন্ধান দেয়। এটি ব্যক্তি ও সমাজকে ভালো পথে পরিচালিত করে। যেসব কারণে মানুষের জীবনে হতাশা ও অধঃপতন সৃষ্টি হয়, সেসব কারণ ও কাজ থেকে দূরে রাখে, নৈতিকতা ব্যক্তির চরিত্র গঠনে সহায়তা করে থাকে। সর্বোপরি নৈতিকতা ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশে ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকে মাহমুদ সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি ঘুষ নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, যা কিনা তার উন্নত নৈতিকতার পরিচয় বহন করে। সামাজিক দুর্নীতি প্রতিরোধেও নৈতিক শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ব্যক্তিজীবন, গোষ্ঠী জীবন, সমাজজীবন এবং রাষ্ট্রীয় জীবনকে দুর্নীতিমুক্ত ও কলুষতামুক্ত করার জন্য নৈতিকতা চর্চার কোনো বিকল্প নেই। আর এ কারণেই আমি প্রশ্নে উল্লিখিত বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করি।
কমেন্ট