সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিচারের প্রতিশ্রুতি ঢাবি উপাচার্যের

সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিচারের প্রতিশ্রুতি ঢাবি উপাচার্যের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সাত কর্মদিবসের মধ্যে দোষীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। মঙ্গলবার বিকেলে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরসহ ভুক্তভোগী কয়েকজন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তাঁদের এই প্রতিশ্রুতি দেন উপাচার্য। তবে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ। জানা যায়, এস এম হল সংসদের জিএস প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র মো. ফরিদ হোসেনকে জোর করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় ছাত্রলীগ। রুমে ইয়াবা ঢুকিয়ে হল থেকে বেরও করে দেওয়া হয়। এরপর গত ১ এপ্রিল ‘হলে থাকার অভিযোগে’ তাঁকে রড ও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজার তালুকদার, হল ছাত্রলীগের সহসহভাপতি ওয়াসিফ হাসান পিয়াস, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হোসেন, সানাউল্লাহ সায়েম ও সাব্বির তাঁকে রুম থেকে বের করে হলের ডাইনিং রুমে মারধর ও রক্তাক্ত করেন। এতে ফরিদের শরীরে ৩২টি সেলাই দিতে হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেন তিনি। এই ঘটনার বিচার চাইতে পরদিন ২ এপ্রিল এসএম হলে যান ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর, সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, শামসুন্নাহার হলের ভিপি তাসনিম আফরোজ ইমি, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির, কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন, ফারুখ হোসেনসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। তাঁরা যখন হলের গেটে পৌঁছান তখন তাদের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি বেনজিরের শরীরে লাথি মারেন এক ছাত্রলীগ কর্মী। একই সময় ভিপি ইমির গায়েও হাত তোলা হয়। ডিম হামলা করা হয় শিক্ষার্থীদের ওপর। অন্যদিকে, ভিপি নুর, আখতার হোসেন, রাশেদ খাঁন, ফারুখ হোসেনসহ বেশ কয়েকজনকে হল প্রাধ্যক্ষের রুমে অবরুদ্ধ করেন ছাত্রলীগের হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, হল সংসদের ভিপি মুজাহিদ কামাল, জিএস জুলিয়াস সিজার তালুকদার, সাহিত্য সম্পাদক আকিব মোহাম্মদ ফুয়াদসহ হল সংসদের নেতাকর্মীরা। এসময় তাঁদেরকে লাঞ্ছনা এবং বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এ ঘটনার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সাক্ষাৎ না পাওয়ায় তাঁরা সারারাত অবস্থান করেন সেখানে। পরের দিন ৩ এপ্রিল সকালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উপাচার্য আখতারুজ্জামান। তিনি হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। পরে ৮ এপ্রিলের মধ্যে আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। ৮ এপ্রিল সোমবারের মধ্যে কোনো বিচার না পাওয়ায় মঙ্গলবার বিকেলে উপাচার্য আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নুর। এসময় তিনি হামলার ঘটনার জড়িতদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তখন ঘটনার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে চিহ্নিতদের পরিচয় ডকুমেন্ট আকারে উপাচার্যের কাছে জমা দেন তিনি। এ সময় উপাচার্য আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিচারের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে এরপরেও যদি বিচার না করা হয় তবে আন্দোলনের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। নুর বলেন, সাত কার্যদিবসের মধ্যেও যদি অভিযুক্তদের বিচার করা না হয় তবে আমরা আন্দোলন করব। তিনি (উপাচার্য) আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। তিনি আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। এরমধ্যে সোমবার বিকেলে মাত্র একটি মিটিং হয়েছে। আরও প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।
মহানবীকে কটূক্তির অভিযোগ, জবির সেই শিক্ষার্থী আটক পূর্ববর্তী

মহানবীকে কটূক্তির অভিযোগ, জবির সেই শিক্ষার্থী আটক

৮ এপ্রিলকে ‘ছাত্র অধিকার দিবস’ ঘোষণা পরবর্তী

৮ এপ্রিলকে ‘ছাত্র অধিকার দিবস’ ঘোষণা

কমেন্ট