আজ বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস

আজ বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস

মশাবাহিত সংক্রামক রোগ ম্যালেরিয়া আমাদের কাছে এখন অতি পরিচিত। রোগটিকে প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কম বেশি ধারণাও রয়েছে। সব ধরনের হাসপাতালেই ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা পাওয়া যায়। থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক অথবা জেলা হাসপাতালগুলোতে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা পাওয়া যায়। সঠিক চিকিৎসা নিলেই ম্যালেরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তারপরও এটাই সত্য যে, পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষই ম্যালেরিয়া ঝুঁকিতে। এই ঝুঁকিতে বাংলাদেশেরও পৌনে দুই কোটি মানুষ। স্ত্রী এনোফিলিস মশার কামড়ে প্লাজমোডিয়াম গোত্রের পরজীবী শরীরে প্রবেশ করলে এই রোগ হয়। ম্যালেরিয়ার লক্ষণ সাধারণত কাঁপুনিসহ জ্বর, মাথাব্যথা থেকে শুরু করে খুব গুরুতর ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ম্যালেরিয়ার জীবাণু মানবদেহে সুপ্ত অবস্থায় অনেক বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ম্যালেরিয়া নির্মূলে প্রস্তুত আমরা।’ ২০০১ সালের ২৫ এপ্রিল প্রথম পালন করা হয় আফ্রিকা ম্যালেরিয়া দিবস। এর পর ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির ৬০তম অধিবেশনে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের প্রস্তাবনা করা হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দিবসটির উদ্বোধন করবেন। দিবসটি উপলক্ষে আজ দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিশেষ কর্মসূচি পালন করা হবে। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে দক্ষিণ এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী ১৩টি জেলার ৭১টি উপজেলায় ম্যালেরিয়া রোগের মারাত্মক প্রাদুর্ভাব রয়েছে। এর মধ্যে পার্বত্য রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি ম্যালেরিয়াপ্রবণ এবং কক্সবাজার মধ্য ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির তথ্য মতে, দেশের মোট ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯৩ শতাংশই তিন পার্বত্য জেলায়। ২০১৭ সালের ম্যালেরিয়া রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৮৫ শতাংশ রোগীই ফ্যালসিপেরাম জীবাণুঘটিত। ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট সময়ে অর্জন হবে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। ম্যালেরিয়া নির্মূলে বাংলাদেশে যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তা হচ্ছে- ২০২১ সালের মধ্যে ১৩টি ম্যালেরিয়াপ্রবণ জেলার বার্ষিক সংক্রমণের হার হাজারে শূন্য দশমিক ৪৬-এর নিচে নামিয়ে আনা। একই সময়ে ১৩টি ম্যালেরিয়াপ্রবণ জেলার আটটিতে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ রোধ করা। ২০২১ সালের মধ্যে ৫১টি জেলাকে ম্যালেরিয়ামুক্ত নিশ্চিত করা। তিনি জানান, ২০০৮ সালের তুলনায় বর্তমানে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা কমেছে ৬৫ শতাংশ এবং মৃত্যুহার কমেছে ৯২ শতাংশ। ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালে দেশে ৩৯ হাজার ৭১৯ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে ৯ জনের মৃত্যু ঘটে। ২০১৬ সালে ২৭ হাজার ৭৩৭ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং ১৭ জনের মৃত্যু ঘটে। ২০১৭ সালে ২৯ হাজার ২৩৭ জন আক্রান্ত হয় এবং ১৩ জনের মৃত্যু ঘটে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৭ সালের সর্বশেষ বিশ্ব ম্যালেরিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৬ সালে ২১ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হন। এর মধ্যে চার লাখ ৪৫ হাজার জনের মৃত্যু ঘটে। যদিও এর আগের বছর এ রোগে মৃতের সংখ্যা ছিল চার লাখ ৪৬ হাজার।
কবি বেলাল চৌধুরীর মরদেহ শহীদ মিনারে পূর্ববর্তী

কবি বেলাল চৌধুরীর মরদেহ শহীদ মিনারে

রোহিঙ্গা ও পাহাড়ি জনপদে আতঙ্ক ম্যালেরিয়া পরবর্তী

রোহিঙ্গা ও পাহাড়ি জনপদে আতঙ্ক ম্যালেরিয়া

কমেন্ট