শঙ্কা উড়িয়ে পাকিস্তানকে জেতালেন ইনজামামের ভাতিজা

শঙ্কা উড়িয়ে পাকিস্তানকে জেতালেন ইনজামামের ভাতিজা

অভিষেকের আগে তিনি বলেছিলেন, প্রথম টেস্ট ম্যাচটা যে আয়ারল্যান্ডে হবে, তা কখনো ভাবেননি। সেই অভিষেক টেস্টে সারাজীবন মনে রাখার মতো স্মৃতি পেয়ে গেলেন ইমাম-উল-হক। পরাজয়ের শঙ্কা থেকে অপরাজিত ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে জেতালেন এই ওপেনার। আয়ারল্যান্ডের অভিষেক টেস্ট ম্যাচটি পাকিস্তান জিতেছে ৫ উইকেটে। আয়ারল্যান্ডও কিন্তু ছেড়ে কথা বলেনি। আইরিশরা ১৬০ রানের ছোট লক্ষ্য দিয়েও ১৪ রানেই পাকিস্তানের ৩ উইকেট তুলে নিয়েছিল। এরপরই বাবব আজমের সঙ্গে ১২৬ রানের অসাধারণ এক জুটি গড়েন ইমাম। শেষ দিকে আরো ২ উইকেট হারালেও ইমাম দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন। অপরাজিত ছিলেন ৭৪ রানে। ইমাম পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক ও বর্তমানে প্রধান নির্বাচক ইনজামাম-উল-হকের ভাতিজা, যিনি ওয়ানডে অভিষেকেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেছিলেন সেঞ্চুরি। এবার টেস্ট অভিষেকে দারুণ এক ইনিংস খেলে দলকে জেতালেন। চতুর্থ দিনের ৭ উইকেটে ৩১৯ রানের সঙ্গে মঙ্গলবার শেষ দিনে আর ২০ রান যোগ করতেই দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের। আগের দিন মাত্র চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে দেশের অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়া কেভিন ও’ব্রায়েন ফিরেছেন মুখোমুখি প্রথম বলেই। ফলে তার ইনিংসও থেমেছে আগের দিনের ১১৮ রানে। মোহাম্মদ আব্বাসের বলে হ্যারিস সোহেলকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২১৭ বলে ১২ চারে ইনিংসটি সাজান ও’ব্রায়েন। শেষ দুই ব্যাটসম্যান হিসেবে বয়েড রানকিন ও টাইরন কেনকে বোল্ড করে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেছেন আব্বাস। ছয় টেস্টের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট পেলেন ২৮ বছর বয়সি ডানহাতি এই পেসার। প্রথম ইনিংসে ৪৪ রানে ৪ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৬৬ রানে। মোহাম্মদ আমির পেয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে তিনশ রান করা পাকিস্তান ১৬০ রানের লক্ষ্যটা সহজেই পেরিয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছিল তখন। কিন্তু সফরকারীরা ধাক্কা খায় শুরুতেই। প্রথম ওভারেই ফিরে যান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আজহার আলী। দ্রুত সাজঘরের পথ ধরেন হ্যারিস সোহেল আর আসাদ শফিকও। দুই অঙ্কে যেতে পারেননি কেউই। তিনজনের দুজন টিম মুরতাগের শিকার। সোহেলকে ফিরিয়েছেন রানকিন। পাঁচ ওভারের মধ্যেই পাকিস্তানের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে তখন অস্ট্রেলিয়ার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে অভিষেক টেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখছিল আয়ারল্যান্ড। অথচ তারা কিনা পড়েছিল ফলোঅনে। ফলোঅনে পড়ে টেস্ট জয়ের নজিরও হাতেগোনা, মাত্র দুটি। ভারত ও ইংল্যান্ডের পর তৃতীয় দল হিসেবে সেই নজির তখন হাতছানি দিচ্ছিল আইরিশদের। কিন্তু আইরিশদের স্বপ্নে বাগড়া দিলেন অভিষিক্ত ইমাম ও বাবর। এই দুজনের ১২৬ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিই হতাশ করল আয়ারল্যান্ডকে। তার আগে অবশ্য নিজেরাই নিজেদের হতাশা করেছে আইরিশরা। লাঞ্চের পর মুরতাগের বলে তৃতীয় স্লিপে অ্যান্ডি বালবির্নি বাবরের ক্যাচটা নিতে পারলে পাকিস্তানের স্কোর হয়ে যেত ৪ উইকেটে ৬০! বাবর যখন ৫৯ রান করে রানআউট হলেন, তখনো ম্যাচে ছিল আয়ারল্যান্ড। জয় থেকে তখনো ২০ রান দূরে পাকিস্তান। তবে থম্পসন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে যখন ফেরালেন, ততক্ষণে পাকিস্তান চলে গেছে নিরাপদ দূরত্বে। জয় থেকে যে পাকিস্তান তখন মাত্র ৮ রান দূরে। শাদাব খানকে নিয়ে সেই কাজটা সেরেছেন অভিষিক্ত ইমাম। সব মিলিয়ে অবশ্য রোমাঞ্চকর এক টেস্ট ম্যাচই দেখল দর্শকরা। প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া, অভিষেকে প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের বিভীষিকাময় ব্যাটিং, ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ও'ব্রায়েনের ঐতিহাসিক সেঞ্চুরিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো, পাকিস্তানের পরাজয়ের শঙ্কা- ডাবলিনের মালাহাইডে রোমাঞ্চের কমতি ছিল না। সংক্ষিপ্ত স্কোর: পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৩১০/৯ ডিক্লে. ও ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৬০) ১৬০/৫ আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৩০ ও ২য় ইনিংস: ৩৩৯ ফল: পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কেভিন ও’ব্রায়েন।
মোস্তাফিজের মুম্বাইয়ের শেষ সুযোগ পূর্ববর্তী

মোস্তাফিজের মুম্বাইয়ের শেষ সুযোগ

নেইমারকে রিয়াল মাদ্রিদে দেখাটা হবে ভয়ঙ্কর : মেসি পরবর্তী

নেইমারকে রিয়াল মাদ্রিদে দেখাটা হবে ভয়ঙ্কর : মেসি

কমেন্ট