‘বন্ধুর প্রেমিকাকে ধর্ষণ’ করায় মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা, আটক তিন

‘বন্ধুর প্রেমিকাকে ধর্ষণ’ করায় মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা, আটক তিন

হবিগঞ্জ থেকে নিখোঁজের ১০ দিন পর গত বুধবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক মাদ্রাসাছাত্রের লাশ। উদ্ধারের পর তাৎক্ষণিকভাবে পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় লাশটি ওই এলাকাতেই দাফন করা হয়। পরে তাকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন কিশোর-কিশোরীকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে আটক তিনজন ওই মাদ্রাসাছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। নিহত মাদ্রাসাছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, লাশ উদ্ধারের ১০ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয় ওই মাদ্রাসাছাত্র। এরপর পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজ করেও পায়নি। এর মধ্যে গত শনিবার বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামের এক তরুণী ওই মাদ্রাসাছাত্রের পাশের বাড়ির এক কিশোরকে জানায়, ওই মাদ্রাসাছাত্রকে নারায়ণগঞ্জে খুন করা হয়েছে। ওই কিশোর এ বিষয়টি নিহত মাদ্রাসাছাত্রের বাবাকে জানায়। পরে গতকাল রোববার সকালে বিষয়টি জানানোর জন্য নিহত কিশোরের বাবা হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় যান। থানায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা অবস্থানের পরও কোনো সাড়া পাননি তিনি। পরে তিনি দুজন সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ উল্ল্যার কাছে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তাঁর ছেলের নিখোঁজের বিষয়টি এসপিকে জানান। এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা কিশোরের বাবার কথা শুনে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিন ও হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) দৌস মোহাম্মদকে ডেকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। এরপর এসপি নিজেই নারায়ণগঞ্জের এসপির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবগত করেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যাকে জানানো হয়, পাঁচদিন আগে রূপগঞ্জের একটি বাসা থেকে এক অজ্ঞাত কিশোরের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছে। দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ডিবির ওসি আল-আমিনকে ছোট বহুলা গ্রামে অভিযানে পাঠানো হয়। এরপর ছোট বহুলা গ্রামে হত্যার বিষয়টি সম্পর্কে জানানো ওই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ওই তরুণী জানায়, একই গ্রামের অন্য এক কিশোরীর কাছ থেকে তিনি হত্যার বিষয়টি জেনেছেন। পরে পুলিশ ওই কিশোরীকে আটক করে। পরে ওই কিশোরীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তার আরেক বান্ধবী ও বান্ধবীর প্রেমিককে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক তিন কিশোর-কিশোরী জানায়, ওই মাদ্রাসাছাত্রের সঙ্গে আটক দুই কিশোরীর একজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অন্য দুই কিশোর-কিশোরীর মধ্যেও প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে চারজন একটি বাসা ভাড়া নেয়। এর মধ্যে একসঙ্গে ভাড়া থাকা অন্য কিশোরীকে কৌশলে ডেকে ধর্ষণ করে ওই মাদ্রাসাছাত্র। পরে ওই কিশোরী এ ঘটনাটি মাদ্রাসাছাত্রের প্রেমিকাকে জানায়। সে বিষয়টি ‘ভুক্তভোগী’ কিশোরীর প্রেমিককে জানায়। এরপর তারা তিনজন ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র জন্য ওই মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা প্রথমে নুডলসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্রকে অচেতন করে। এরপর শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। ডিবির ওসি আল-আমিন বলেন, আটক তিনজন নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে। তাঁদের তিনজনের বয়সই ১৮ বছরের কম। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, নিহত মাদ্রাসাছাত্রের বাবার কাছ থেকে বিষয়টি জানার পরই এর রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেই। নির্দেশনা অনুযায়ী কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় পুলিশ এর রহস্য উদঘাটন করে।
মাওলানা মামুনুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে পূর্ববর্তী

মাওলানা মামুনুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে

মসজিদের দানের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১ পরবর্তী

মসজিদের দানের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১

কমেন্ট