অস্ট্রেলীয় পরিচালক বাজ লারম্যান উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত নাটক রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট অবলম্বনে নির্মাণ করেছিলেন রোমিও+জুলিয়েট। ১৯৯৬ সালের ২৭ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া ওই রোমান্টিক ড্রামা সিনেমায় রোমিওর ভূমিকায় অভিনয় করে প্রথম পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছিলেন লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও। তার বিপরীতে জুলিয়েট চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করেছিলেন ক্লেয়ারি ডেইন্স। 

আমেরিকাসহ চারটি দেশে মুক্তি পাওয়া মাত্র ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচে নির্মিত ওই সিনেমা বক্সঅফিস থেকে তুলে এনেছিল প্রায় ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

এবার শেক্সপিয়ারের এ কালজয়ী কাহিনি পর্দায় আনছেন টিমোথি স্কট বোগার্ট। ১৫৯৭ সালের সেই পুরোনো গল্পটি হুবহু ধারণ না করে ওই কাহিনি অবলম্বনে চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন টিমোথি নিজেই। শুধু তাই নয়, নাম উলটে দিয়ে সিনেমাটির পর্দায় আনছেন ‘জুলিয়েট অ্যান্ড রোমিও’ শিরোনামে। ৯ মে আমেরিকা ও ইতালিতে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। 

এ মিউজিক্যাল রোমান্টিক ড্রামা সিনেমায় জুলিয়েট চরিত্রে অভিনয় করেছেন ২৭ বছর বয়সি ড্যানিশ অভিনেত্রী ও গায়িকা ক্লারা রুগার্ড। তার বিপরীতে রোমিও চরিত্রে অভিনয় করেছেন অস্ট্রেলীয় সিনেমা দর্শকের হার্টথ্রব অভিনেতা জেমি ওয়ার্ড।

আইকনিক রোমান্টিক ট্র্যাজেডি এ সিনেমার অফিসিয়াল ট্রেলার প্রকাশের পর থেকে প্রচুর জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। চমৎকার কয়েকটি গানের সুরেলা মায়ায় জড়িয়ে দর্শকের আগ্রহ তৈরি হয়েছে জুলিয়েট চরিত্রের ক্লারাকে ঘিরে। পপসংগীতের দুর্দান্ত পারফর্মেন্স রয়েছে এ সিনেমায়। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন করে শেক্সপিয়ারের প্রেমে পড়তে যাচ্ছেন দর্শকরা। 

বিশেষ করে বিয়ন্সের ‘হ্যালো’ এবং রিহান্নার ‘এসওএস’ দর্শক-শ্রোতাকে বিমোহিত করবে। এ সিনেমার অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেসন আইজ্যাক্স, টেলা পার্কস, ড্যান ফগলার প্রমুখ।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইতালির ভেরোনায় শুরু হয়েছিল এ সিনেমার কাজ। প্রথমে এর নাম ঠিক করা হয়েছিল ‘ভেরোনা’। পরে আরেক দফা পরিবর্তন করে এর নাম রাখা হয়েছিল ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট অব ভেরোনা’। চূড়ান্তভাবে এর নামকরণ হয় ‘জুলিয়েট অ্যান্ড রোমিও’।

হলিউড বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিনেত্রী ও গায়িকা ক্লারা রুগার্ডের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের বাঁকবদল হতে পারে এ সিনেমার মাধ্যমে। ২০১৩ সালে ছোট্ট একটি চরিত্রের মাধ্যমে সিনেমায় অভিষেক হয়েছিল এ তারকার। এরপর নায়িকা চরিত্রে প্রথম সুযোগ পান আইরিশ পরিচালক রেবেকা ড্যালি পরিচালিত আইরিশ, বেলজিয়ান, ড্যানিশ ও ডাচ ড্রামা সিনেমা ‘গুড ফেভার’র মাধ্যমে। ২০১৯ সালের ব্রাসেল্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দর্শক জরিপে সেরা সিনেমার পুরস্কার পায় এটি। সেইসঙ্গে প্রশংসিত হতে শুরু করেন ক্লারাও। 

যদিও তার পরবর্তী সিনেমাটির মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন না, তবু ম্যাক্স মিংহেলা পরিচালিত ‘টিন স্পিরিট’ সিনেমার রক্সি চরিত্রে দর্শকমহলে দারুণ আলোচিত হন তিনি। তবে তার ক্যারিয়ারে বড় ব্রেকথ্রো এনে দেন অস্ট্রেলীয় পরিচালক গ্র্যান্ট স্পিউটোর। ‘আই অ্যাম মাদার’ সিনেমায় নামভূমিকায় অভিনয় করা লিউক হকারের কন্যার ভূমিকায় দর্শকদের মন জয় করেন ক্লারা। 

এরপর স্প্যানিশ পরিচালক রডরিগো কর্টিজ পরিচালিত ‘লাভ গেটস রুম’ সিনেমার স্টেফশিয়া চরিত্রটি তাকে চূড়ান্তভাবে নায়িকা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। সর্বশেষ ২০২২ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত সায়েন্স ফিকশন রোমান্টিক ড্রামা সিনেমা ‘প্রেস প্লে’। ‘জুলিয়েট অ্যান্ড রোমিও’ ক্লারা রুগার্ডের ক্যারিয়ারকে কোথায় নিয়ে যায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।