সংসদে ১০০ সংরক্ষিত নারী আসনে সবাই একমত : আলী রীয়াজ
আগামী সংসদ নির্বাচনে ১০০ নারী সদস্যের সংরক্ষিত আসনের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, ‘নারী আসন নিয়ে দুয়েকটি রাজনৈতিক দল বাদে কারো কোনো দ্বিমত নেই। তবে কোন পদ্ধতিতে সংরক্ষিত আসনে নারীরা সংসদে আসবেন, সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে একমত হওয়া যাবে।
’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ফলাফলের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আলোচনা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমাদের প্রতিনিয়তই অগ্রগতি হচ্ছে এবং আমরা আশা করছি যে জুলাই মাসের মধ্যে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত জাতীয় সনদে পৌঁছাতে পারব এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থে সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আমরা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রথম দফার আলোচনার পর সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কিছু বিষয়ে পুনর্বিবেচনার কথা রাজনৈতিক দলগুলো বলেছিল। তার প্রেক্ষিতে আজকে আবার এ বিষয়ে আলোচনা করার পর আমরা এ বিষয়ে একমত হতে পেরেছি যে ৭০ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান বিধান পরিবর্তন করে অর্থবিল ও আস্থা ভোটের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বাধ্যবাধকতা থাকবে যেন তারা দলের পক্ষে ভোট দেন।
’
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, গত দিনের আলোচনার তুলনায় একটি অগ্রগতি হয়েছে এবং আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে পারি যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ওই ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে চারটি কমিটি, অর্থাৎ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, এস্টিমেশন কমিটি এবং পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্রান্ত কমিটিগুলোর সভাপতির পদ আসনের সংখ্যানুপাতিক হারে বিরোধী দলকে প্রদানের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন।’
আরো পড়ুন
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জামায়াতের না থাকা প্রশ্নে যা বললেন প্রেসসচিব
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জামায়াতের না থাকা প্রশ্নে যা বললেন প্রেসসচিব
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘জাতীয় সংসদের নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয় দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য ১০০টি আসন সংরক্ষিত করার জন্য সবাই একমত হয়েছেন। তবে এর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে একমত হওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে যেটি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে আছে তার পাশাপাশি সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদে আছে সেগুলো সংশোধনের ব্যাপারে এক ধরনের ঐকমত্য হয়েছে। কিন্তু আমরা এই বিষয়টি আগামী সপ্তাহে আবার আলোচনা করব যেন একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আমরা আসতে পারি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে কিন্তু তার সঙ্গে নীতিগতভাবে কিছু কিছু দল এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু এটা কমবেশি সবাই স্বীকার করেছেন যে এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনার দরকার আছে।
’
এ সময় কমিশনের একটি বড় স্টেকহোল্ডার হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর আজকের আলোচনায় অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হলে আমরা সার্বক্ষণিকভাবে সব দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি যেন তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। কমিশনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, আজ উপস্থিত না থাকতে পারলেও আগামীকাল তারা বা তাদের প্রতিনিধিরা এখানে উপস্থিত থাকবেন।’
কমেন্ট