কবিতা পড়ে নিখিলের প্রতি ভালোলাগা তৈরি হয় সান্ত্বনার। ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা। অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন এই যুগল। বিয়েতে দেনমোহর হিসেবে কোনো টাকা বা গয়না নয়, দেওয়া হয় ১০১টি বই।

এই বইগুলোর দেনমোহরেই শুক্রবার রাতে ঘর বাঁধলেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিখিল নওশাদ ও সান্ত্বনা খাতুন। এমন মননশীল চিন্তার বাস্তবায়নে প্রশংসায় ভাসছেন নবদম্পতি।
কনের পছন্দের ১০১টি বইয়ের তালিকায় রয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,  মীর মোশাররফ হোসেন, সমরেশ মজুমদার, হাসান আজিজুল হক, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শেক্সপিয়ার, উইলিয়াম ওয়ার্ডস, ডব্লিই.বি. ইয়েটসসহ দুই বাংলার জনপ্রিয় ও বিদেশি লেখকের বই।

নিখিল নওশাদ ধুনট উপজেলার গুয়াডহরী গ্রামের সামছুল ইসলামের ছেলে। ‘বিরোধ’ নামে একটি ছোট কাগজের সম্পাদক তিনি। এক দশক ধরে কবিতা লেখালেখি করছেন। পাশাপাশি বেসরকারি একটি কম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আর সান্ত্বনা খাতুন সোনাতলা উপজেলার কামালেরপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজার রহমানের মেয়ে। তিনি বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া দাখিল মাদরাসার ইংরেজির শিক্ষক। বিয়েতে ছেলের বাবা ও মেয়ের মা উপস্থিত ছিলেন।

কবি নিখিল নওশাদ বলেন, কবিতার সূত্র ধরেই ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী সান্ত্বনা খাতুনের সঙ্গে পরিচয়। পরিচয় থেকে ভালোলাগা, ভালোবাসা। শেষে দুজনই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। তবে দাম্পত্য জীবন শুরুর আগে সান্তনার ভিন্ন শর্ত ছিল। সোনাদানা নয়, বিয়ের দেনমোহর হিসেবে উপহার চান ১০১টি প্রিয় বই।

সান্ত্বনা খাতুন বলেন, নিখিলের কবিতা পড়ে ওর প্রেমে পড়েছি। ওর কবিতা খুব ভালো লাগে। সোনাদানা, টাকাকড়ি আমার কাছে মূল্যহীন। বই আমার কাছে অমূল্য সম্পদ। তাই বিয়ের দেনমোহরানা হিসেবে ১০১টি বই চেয়েছি। পারিবারিক গ্রন্থাগার গড়ার স্বপ্ন রয়েছে। যেখানে দেনমোহর হিসেবে পাওয়া বইগুলো সাজিয়ে রাখব।

বরের বাবা শামসুল ইসলাম বলেন, ছেলে নিখিল ১০১টি বই দেনমোহর হিসেবে পুত্রবধূকে দিয়েছি। এই বইগুলোর মোট আর্থিক মূল্য দুই লাখ ২ হাজার টাকা।

বিয়ে নিবন্ধনকারী (কাজী) আব্দুল হান্নান জানান, কোনো সম্পত্তি, সম্পূর্ণ দেনমোহর বা উপহার অংশ বিশেষের পরিবর্তে প্রদত্ত হয়েছে কিনা বিয়ে রেজিস্ট্রি ফরমে এমন একটি ঘর আছে। সে অনুযায়ী দেনমোহর বাবদ ১০১টি বই, যার মূল্য ধরা হয়েছে দুই লাখ টাকা। বরের প্রস্তাবে কনে রাজি হয়েছেন।