তরুণদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরো বেশি অংশগ্রহণের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
মিলানে ইতিহাস বদলানোর মিশনে বার্সা
সান সিরোয় এবার নতুন গল্প না ২০১০ সালের পুনরাবৃত্তি হবে? দেড় দশক আগে সেমিফাইনালে বার্সেলোনার বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলে সেবার শিরোপাও জিতেছিল ইন্টার মিলান। শেষ চারের ওই লড়াইয়ে ন্যু ক্যাম্প থেকে হেরে ফিরলেও নিজ মাঠে কাতালানদের ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিল হোসে মরিনহোর ত্রিমুকুটজয়ী দলটি। ওই সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনতে মিলানে ইতিহাস বদলানোর মিশনে বার্সাসংকল্পবদ্ধ সিমোনে ইনজাঘির দল। বার্সেলোনা কি পারবে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে ইন্টারের মাঠে নতুন ইতিহাস লিখে এক দশক পর ফাইনালের টিকিট কাটতে?
প্রথম পর্বে ছয় গোলের রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ উপহার দিয়েছিল বার্সা-ইন্টার।
বার্সেলোনার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে সেদিন স্বাগতিক সমর্থকদের স্তব্ধ করে ত্রিশ সেকেন্ডে কাতালানদের জালে বল পাঠিয়েছিলেন মার্কাস থুরাম। এরপর ডেনজেল ডেমফ্রিসের গোলে মিনিট কুড়ির সময় দুই গোলে পিছিয়ে পড়েছিল হ্যান্সি ফ্লিকের দল। দুই গোল হজম করে অবশ্য ভড়কে যায়নি বার্সা, বরং ঘুরে দাঁড়িয়ে এই দুরবস্থা থেকে ফিরে আসার আরেকটি অসাধারণ কাব্য লিখে কাতালানদের লড়াইয়ে রেখেছেন লামিন ইয়ামাল-মিলানে ইতিহাস বদলানোর মিশনে বার্সাফেরান তোরেসরা। ইন্টার সমর্থকদের হৃদয় ভেঙে ফাইনালে পৌঁছতে হলে আজ রাতেও ইয়ামালদের কাছে এমন জাদুকরী কিছুর প্রত্যাশায় থাকবে কাতালানরা।
যদিও অতীত রেকর্ড মোটেও বার্সেলোনার হয়ে কথা বলছে না। সান সিরোয় ইন্টারের বিপক্ষে এর আগে ছয় ম্যাচ খেলে তারা জিতেছে মোটে একবার। সব মিলিয়ে ইতালিতে চব্বিশ ম্যাচ খেলে কাতালানরা জিতেছে পাঁচটি। তা ছাড়া ঘরের বাইরে সেমিফাইনালের সর্বশেষ চার ম্যাচেই হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা সঙ্গী কাতালানদের।
অন্যদিকে নিজ মাঠে ইন্টার যেন অজেয়! সান সিরোয় ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় নিজ মাঠে খেলা সর্বশেষ পনেরো ম্যাচে তারা অপরাজিত। এর মধ্যে ১২টিতেই বিজয় উৎসব করেছে তারা। নিজ মাঠে সর্বশেষ এগারো সেমিফাইনালের ৯টিতেই জিতে মাঠ ছেড়েছে ইন্টার।
বার্সাকে ফাইনালে নিয়ে যেতে হলে ইন্টারের গৌরবের এই অতীত বদলে দিতে হবে ইয়ামাল-রাফিনিয়াদের। বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক জেতার ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয়ী, ‘ফিরতি পর্বে ইন্টার শুধু রক্ষণ সামলাবে না, প্রচেষ্টা চালিয়ে গোলও করতে হবে তাদের।
এটা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল, ইউরোপের সেরা চারটি দল এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এখনো ৯০ মিনিটের খেলা বাকি আছে। আশা করি, ফাইনালে ওঠার জন্য এটা যথেষ্ট হবে। এটা আমাদের লক্ষ্যও। এর জন্য আমরা লড়াইও করব।’ অভিন্ন লক্ষ্য ইন্টারের ইতালিয়ান কোচ সিমোনে ইনজাঘিরও। তাঁর কাছে এটাও তো একটা ফাইনাল, ‘প্রথম পর্বে দুর্দান্ত একটা ম্যাচ হয়েছে। আমরা জানি, সেমিফাইনালের লড়াইটা কতটা কঠিন। আমরা ম্যাচটা জিততেও পারতাম। আমাদের সমর্থকরা জানে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা নিংড়ে দিচ্ছি। আমরা এটাও জানি, মঙ্গলবারের (আজ রাতে) ম্যাচটা ফাইনাল!’
ইন্টারের জন্য দুঃসংবাদ হচ্ছে, আজ হয়তো সাইড বেঞ্চে ঠিকানা হবে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার লাউতারো মার্তিনেসের। বদলি হিসেবে এই আর্জেন্টাইনের বার্সার বিপক্ষে খেলার ক্ষীণ সম্ভাবনা অবশ্য আছে। প্রথম পর্বের খেলার সময় কুঁচকিতে চোট পেয়েছিলেন লাউতারো মার্তিনেস। তবে তাঁকে ছাড়াও লড়াইটা জিততে চায় ইতালির জায়ান্টরা। দুই বছর আগেও চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলেছিল ইন্টার। অন্যদিকে ২০১৫ সালের পর আর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলেনি বার্সেলোনা। চোট নিয়ে দুর্ভাবনা আছে কাতালানদেরও। চোটের জন্য ইন্টারের বিপক্ষে ফিরতি পর্বে খেলতে পারবেন না প্রথম পছন্দের রাইট ব্যাক জুলেস কুন্দে। তবে দীর্ঘ চোট কাটিয়ে গোলরক্ষক টের স্টেগানের মাঠে ফেরার সুখবরও আছে স্প্যানিশ জায়ান্টদের জন্য। ইন্টারের বিপক্ষে ফিরতি পর্বে মাঠে নামার জন্য তৈরি আছেন পোলিশ ফরোয়ার্ড রবার্ত লেভানদোস্কি ও আলেহান্দ্রো বালদে। তবে আজ শুরুর একাদশে হয়তো জায়গা পাবেন না তাঁদের কেউই।
কমেন্ট