সামাজিক মাধ্যমে পুতিনকে পুরোপুরি পাগল’ বলেও মন্তব্য ট্রাম্পের

সামাজিক মাধ্যমে পুতিনকে পুরোপুরি পাগল’ বলেও মন্তব্য ট্রাম্পের

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিমান হামলার পর ট্রাম্প বলেন, তিনি পুতিনের কর্মকাণ্ডে ‘খুশি নন’। 

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তার কী হয়েছে? তিনি তো প্রচুর মানুষ হত্যা করছে।’ পরে সামাজিক মাধ্যমে পুতিনকে পুরোপুরি পাগল’ বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।


অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, রুশ হামলার পরেও ওয়াশিংটনের ‘নীরবতা’ পুতিনকে আরো উৎসাহিত করছে। তিনি মস্কোর ওপর আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছেন।

গত রবিবার রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর ৩৬৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এক রাতের মধ্যে সর্বোচ্চ হামলার রেকর্ড। এতে অন্তত ১২ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।


সোমবার ভোরে আবারও ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা বাজানো হয়। খারকিভ শহরে এক শিশুসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার মেয়র ইহোর তেরেখভ। দক্ষিণের জাপোরিঝিয়া অঞ্চলেও দুইজন আহত হয়েছেন বলে জানান প্রশাসনিক প্রধান ইভান ফেডোরভ।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর দিকে আসা ইউক্রেনের দুটি ড্রোন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র সেরগেই সোবিয়ানিন।


তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
রবিবার রাতে নিউ জার্সিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি পুতিনকে অনেক দিন ধরে চিনি, আমাদের সম্পর্কও ভালো ছিল, কিন্তু এখন সে শহরে শহরে রকেট ছুড়ে মানুষ মেরে ফেলছে। এটা আমার একদম পছন্দ না।’

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘অবশ্যই।’ যদিও পূর্বেও তিনি নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন, কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেসব কার্যকর করেননি।

এরপর ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘পুতিন পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি বরাবরই বলেছি, তিনি (পুতিন) পুরো ইউক্রেন দখল করতে চায়, শুধু একটা অংশ নয়।’

তবে ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকেও কঠোর ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, ‘তিনি যেভাবে কথা বলছেন, তা তার দেশের কোনো উপকার করছে না। তার মুখ থেকে বের হওয়া প্রতিটি কথাই সমস্যা সৃষ্টি করছে, আমি এটা পছন্দ করছি না এবং এটা বন্ধ হওয়া উচিত।’

ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি নিলেও, যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে—যদি শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি না হয়, তাহলে তারা হয় আলোচনা চালিয়ে যাবে, নয়তো সম্পূর্ণ সরে যাবে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে দুই ঘণ্টার একটি ফোনালাপ হয়, যেখানে তারা যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করেন। ট্রাম্প জানান, আলোচনাটি ‘খুব ভালো’ হয়েছে এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন শিগগিরই যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসবে।

ইতোমধ্যে ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিয়েছে। পুতিন অবশ্য বলেছেন, রাশিয়া একটি ‘সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ শান্তিচুক্তি’ নিয়ে আলোচনার জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে একটি স্মারক তৈরিতে কাজ করবে। ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা এটিকে সময়ক্ষেপণ ও বিভ্রান্তিমূলক কৌশল হিসেবে দেখছেন।

২০২২ সালের পর এই প্রথমবারের মতো ১৬ মে তুরস্কের ইস্তানবুলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তবে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে খুব একটা অগ্রগতি হয়নি, শুধু একটি বড় বন্দি বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।

ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিষেধাজ্ঞার আহবান স্পেনের পরবর্তী

ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিষেধাজ্ঞার আহবান স্পেনের

কমেন্ট