ভারতের মণিপুর রাজ্যে বিক্ষোভ, কারফিউ জারি ও বন্ধ ইন্টারনেট

ভারতের মণিপুর রাজ্যে বিক্ষোভ, কারফিউ জারি ও বন্ধ ইন্টারনেট

সংগঠন আরামবাই টেঙ্গোলের (এপি) নেতা কানান সিংকে গ্রেপ্তারের জেরে ভারতের মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। মেইতেই সম্প্রদায়ের এই স্বেচ্ছাসেবক গোষ্ঠীর সদস্যরা নিজেদের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আত্মাহুতির হুমকি দিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইম্ফলের পাঁচটি জেলায় কারফিউ জারি ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।


গতকাল শনিবার (৭ জুন) রাতে নিরাপত্তা বাহিনী কানান সিংকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই ইম্ফলে প্রতিবাদ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। কিছু বাসিন্দা গুলির শব্দও শুনেছেন বলেও জানিয়েছেন। এক ভিডিওতে দেখা যায়, কালো টি-শার্ট পরা একদল যুবক পেট্রলের বোতল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের একজন বলতে শোনা যায়, ‘আমরা অস্ত্র সমর্পণ করেছি। বন্যায় যা করার কথা, আমরা করেছি। এখন আপনারা আমাদের গ্রেপ্তার করছেন। আমরা নিজেদের মেরে ফেলব।’

 

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ময়রাংথেম অমিতের বাড়িতে হামলা ও পরবর্তীকালে ওই সিনিয়র পুলিশ অফিসারকে অপহরণের ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন ছিলেন কানান সিং। ওই মাসেই তিনি রাজ্য পুলিশের একটি কমান্ডো ইউনিটের হেড কনস্টেবল হিসেবে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে আরামবাই টেঙ্গোলে যোগ দেন।

উত্তেজনা প্রশমিত করতে 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিষ্ণুপুর, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, থৌবাল ও কাকচিং জেলায় কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। একইসঙ্গে এই জেলাগুলোতে পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে মণিপুরের গভর্নর এ কে ভাল্লার নির্দেশে সীমান্ত রাজ্যে অবৈধভাবে রক্ষিত ও লুট করা অস্ত্র সমর্পণ করেছিল গোষ্ঠীটি।  সম্প্রতি মণিপুরের উপত্যকা অঞ্চলে বন্যা ত্রাণ কাজেও অংশ নিয়েছিলেন এটি সদস্যরা, যা তাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল।

কানান সিংয়ের গ্রেপ্তার এমন এক সময়ে ঘটল যখন মণিপুর মেইতেই ও কুকি উপজাতিদের মধ্যে চলমান জাতিগত সংঘর্ষে জর্জরিত। এই সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রাজ্যটি জাতিগতভাবে বিভক্ত হওয়ায়, তদন্তকারীরা যখনই সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করতে যান, তখন উভয় সম্প্রদায়ের কাছ থেকে প্রতিরোধের সম্মুখীন হন।


আরামবাই টেঙ্গোল নিজেদের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে দাবি করে। তারা ২০২৩ সালে জাতিগত সহিংসতা শুরুর প্রথম দিকে ‘গ্রাম স্বেচ্ছাসেবক’ হিসেবে অস্ত্র হাতে নিয়েছিল। সম্পদায়টির অভিযোগ ছিল, কুকি জঙ্গিদের আক্রমণে তাদের গ্রামগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছিল। অন্যদিকে কুকি উপজাতিরা এটিকে একটি ‘র‌্যাডিক্যাল মেইতেই মিলিশিয়া’ হিসেবে অভিযোগ করে, যারা কুকি গ্রামগুলোতে আক্রমণ চালাচ্ছে।

সম্পর্ক ছিন্ন করলেন ট্রাম্প, নতুন দল করছেন মাস্ক! পরবর্তী

সম্পর্ক ছিন্ন করলেন ট্রাম্প, নতুন দল করছেন মাস্ক!

কমেন্ট